বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের তথ্যানুযায়ী, দীঘিনালায় তামাকের কারণে প্রতিনিয়ত যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ২০১১ সালে উপজেলায় যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ছিল ১০০ জন। তাঁদের মধ্যে মারা যান দুজন। ২০১২ সালে যক্ষ্মা রোগীর ১৪০ জনের মধ্যে নারীর সংখ্যা ৫৪ জন। তাঁদের মধ্যে মারা গেছেন দুজন। ২০১৩ সালে মে মাস পর্যন্ত যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫২ জন। তাঁদের মধ্যে নারী রোগীর সংখ্যা ২২ জন।
ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির উপজেলা ব্যবস্থাপক শ্যামল চাকমা বলেন, মূলত তামাকের কারণেই দীঘিনালায় যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তামাক চাষের সঙ্গে জড়িত না থাকলেও চুল্লির কারণে অনেকে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
বোয়ালখালী এলাকার আমেনা বেগম (৫২) বলেন, তাঁরা দুই বছর ধরে তামাক উৎপাদন করছেন। ছয় মাস আগে তাঁর শরীরে যক্ষ্মা ধরা পড়ে। ওষুধ সেবন করে তিনি ভালো হয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জানা গেছে, ২০১২ সালে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত ১৩৭ জন রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। ২০১৩ সালে এ রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮১৪ জন শ্বাসকষ্টের রোগী ভর্তি হন। হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (এমও) পলাশ নাগ বলেন, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগ রোগীই তামাক উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। তামাক চুল্লির ধোঁয়া থেকে বের হওয়া নিকোটিন গ্যাসের কারণে এ রোগ দেখা দিচ্ছে।
উপজেলার বাঁচামরুং এলাকায় তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের গুদামে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে গ্রেডার শ্রমিক ৫০ জন, আর লাইনম্যান হিসেবে ১০ জন নারী শ্রমিক কাজ করছেন। তাঁদের কারো মুখেই মুখোশ (মাস্ক) ছিল না। নারী শ্রমিকেরা জানান, পেটের তাগিদে তাঁরা মাত্র ১২০ টাকা মজুরিতে দৈনিক ১০ ঘণ্টা কাজ করছেন। তামাকের কাজ করলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। খাবারে অরুচি জাগে। নেশার মতো লাগে, ঘুম ঘুম ভাব আসে। মজুরি হিসেবে যে টাকা তাঁরা পান, তা দিয়ে তাঁদের পেটের ভাতও জোটে না। (সূত্র: প্রথম আলো)