চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি ও অপকর্মের বিচার চাইতে গিয়ে হামলার শিকার পাহাড়িরা, আহত ২

0
971

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ।। চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি ও অপকর্মের বিচার চাইতে গিয়ে সাবেক মহিলা কাউন্সিলর ফেরদৌসী বেগম মুন্নীর বাসভবনে হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন পাহাড়িরা। এতে দুই জন পাহাড়ি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

আজ শুক্রবার (৩০ অক্টোবর ২০২০) বিকাল সাড়ে ৪টার সময় নগরীর বায়েজীদ থানাধীন অক্সিজেন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সাবেক কাউন্সিলর মুন্নীর ছোট ভাই মো. অভির নেতৃত্বে একদল লোক অক্সিজেনের জেলা পরিষদ এলাকায় বসবাসরত এক পাহাড়ির বাসায় গিয়ে তার স্ত্রীর গলার স্বর্ণ চেইন ও নগদ ৯ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়া বিকাশে আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে চেইনটি ফেরত দেওয়া হলেও টাকাগুলো ফেরত দেওয়া হয়নি। এর আগে গত ১৭ অক্টোবরও তারা একই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে এবং প্রায় সময় নারীদের উত্যক্ত করে বলে পাহাড়িরা অভিযোগ করেন।

এসবের প্রতিকার পেতে আজ বিকালে ওই এলাকায় বসবাসরত পাহাড়িরা নারী-পুরুষ, শিশুসহ ৫০/৬০ জন সাবেক কাউন্সিলর মুন্নীর কাছে বিচার চাইতে তাঁর বাসভবনে যান। কিন্তু তিনি বাসায় না থাকার কারণে ফোন নাম্বার নিয়ে পাহাড়িরা তাঁর সাথে কথাবার্তা বলে ঘটনার বিস্তারিত জানান।

এ সময় তিনি (মুন্নী) এসব ঘটনায় তাঁর ভাই যে জড়িত তা সঠিক কিনা জানতে চাইলে পাহাড়িরা যথাযথ বিবরণ দিলে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেন। তবে পাহাড়িরা থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরিবর্তে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান দাবি করলে তিনি শনি/রবিবারের মধ্যে তাঁর সাথে দেখা করতে বলেন।

হামলায় আহত পাহাড়িরা। ছবি: সংগৃহিত

সাবেক কাউন্সিলর মুন্নীর সাথে ফোনে কথাবার্তা বলার সময়ই তাঁর ভাই মো. অভি মোটর সাইকেল যোগে সেখানে এসে পৌঁছে এবং অস্ত্র বের করে পাহাড়িদের হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকেন। পরে আরো ৩/৪টি মোটর সাইকেল যোগে মো. অভির সাঙ্গপাঙ্গরা উপস্থিত হয়ে পাহাড়িদের উপর হামলা শুরু করে। তারা বিল্ডিংয়ের ছাদের উপর থেকে পাহাড়িদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং ফাঁকা গুলি ছূঁড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ সময় কেউ কেউ যে যেদিকে পারে পালিয়ে গেলেও প্রায় ২০/৩০ জন পাহাড়ি নারী-পুরুষ-শিশু সেখানে তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েন। তাদের হামলায় অন্তত দু’জন পাহাড়ি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহত দু’জনের মাথা ফেটে যায়।

এ ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হলে মো. অভি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা সেখান থেকে সরে যায়। পুলিশ পাহাড়িদের কাছ থেকে ঘটনার বিষয়ে জেনে নেয় এবং কয়েকজনের নাম, ঠিকানা লিখে নেয়। এ সময় পুলিশ থানায় অভিযোগ দিলে আইনগত প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে পাহাড়িদেরকে জানায়।

পরে জিম্মি হয়ে পড়া পাহাড়িরা সেখান থেকে নিজ নিজ বাসায় চলে আসেন। তবে অভির নেতৃত্বে অক্সিজেন এলাকায় বসবাসকারী পাহাড়িদের উপর বিক্ষিপ্তভাবে হামলা ও মারধর করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ফলে পাহাড়িরা এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত/প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.