
গুইমারা প্রতিনিধি ।। খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার সিন্দুকছড়িতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এক ত্রিপুরা গ্রামবাসীর জুম ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে এবং আরেকজনের জুমের ঘর ভেঙে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৯ জুন ২০২১) দিবাগত মধ্যরাতে সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের ঠাণ্ডাছড়ি ও পংখীমুড়ো এলাকায় পৃথকভাবে এ দুটি ঘটনা ঘটে।
যার জুম ঘরটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তার নাম নঞ্জয় ত্রিপুরা (৩৫), পিতা- মৃত পজিন কুমার ত্রিপুরা, গ্রাম-ঠাণ্ডাছড়ি। আর যার জুম ঘরটি ভেঙে দেয়া হয়েছে তার নাম পনে রঞ্জন ত্রিপুরা (৪৫), পিতা- মৃত ব্রেজ মোহন ত্রিপুরা, গ্রাম- মনাজয় কার্বারী পাড়া। তারা উভয়ই সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা।
জানা যায়, গত ২/৩ মাস আগে থেকে ঠাণ্ডাছড়িতে সেনাবাহিনীর একটি দল তাদের পরিত্যক্ত একটি পোষ্টে আবার নিয়মিত অবস্থান করতে শুরু করে। গতকাল দিবাগত মধ্যরাত আনুমানিক ২:০০টার দিকে সেখানে অবস্থানরত সেনা সদস্যরা পার্শ্ববর্তী নঞ্জয় ত্রিপুরার জুমখেতে গিয়ে তার জুম ঘরে রাখা চাউল, হাড়ি-পাতিল, লেপ, কাপড়-চোপড়সহ ঘরের সব জিনিসপত্র বের করে দিয়ে ঘরটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ সময় নঞ্জয় ত্রিপুরা ঘরে ছিলেন না। তারা শুধুমাত্র দিনের বেলায় জুমের কাজ করতে যান এবং জুমঘরে দিনের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিয়ে থাকেন।
সেনা সদস্যরা টর্চলাইট জ্বালিয়ে নঞ্জয় ত্রিপুরার জুম ঘরে যাওয়ার সময় পার্শ্ববর্তী জুমে অবস্থানরত জুমচাষীরা তা দেখতে পান।
অপরদিকে, একই সময়ে পংখীমুড়োতে সনে রঞ্জন ত্রিপুরার ভোগদখলীয় জায়গায় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’র নামে স্থাপিত সেনা চৌকিতে অবস্থানরত সেনা সদস্যরা চৌকির (ক্লিনিক) পার্শ্ববর্তী পনে রঞ্জন ত্রিপুরার জুমখেতে নির্মাণাধীন জুম ঘরটি ভেঙে দেয় বলে খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, সেনাবাহিনী কর্তৃক মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি সড়কটি সংস্কারের পর থেকে পংখীমুড়োসহ সড়কের আশে-পাশে বসবাসরত পাহাড়িদেরকে ঘর নির্মাণে বাধা প্রদান, ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ নানা হয়রানি করা হচ্ছে। গত ১২ জুন রাতের আঁধারে পংখী মুড়োতে সনে রঞ্জন ত্রিপুরা নামে এক গ্রামবাসীর নির্মিত ঘর ভেঙে দিয়ে তার ভোগদখলীয় জায়গাটি দখল করে সেখানে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ নাম দিয়ে একটি সেনা চৌকি নির্মাণ করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভসহ জমির মালিক সনে রঞ্জন ত্রিপুরা প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি দিলেও সেনারা এখনো জায়গাটি বেদখল করে সেখান অবস্থান করে রয়েছে। ফলে পাহাড়িরা এখন উচ্ছেদ আতঙ্কে দিনযাপন করছেন।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।