ঢাকা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ২০২৩

পার্বত্য চট্টগ্রামে দমন, পীড়ন, নির্যাতন বন্ধ করে পাহাড়ি জনগণের ন্যায্য দাবি পূর্ণস্বায়ত্তশাসন মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা।
আজ শুক্রবার (১০ নভেম্বর ২০২৩) বিকাল সাড়ে ৩ টায় ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাঙলাদেশ লেখক শিবির সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল ঢাকা অঞ্চল সংগঠক দেলোয়ার হোসেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক এহতেশাম ইমন,গার্মেন্টস মজদুর ইউনিয়নের সংগঠক মো আসাদুল্লাহ ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন (টাফ) ঢাকা অঞ্চল সম্পাদক হেমন্ত দাষ।
পিসিপি নেতা অমল ত্রিপুরা বলেন, বাংলাদেশ এক জাতির রাষ্ট্র নয়। এদেশে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, সানতাল, ওরাও সহ ৪৫টির অধিক জাতিসত্তা বাস করছে। এসব জাতিসত্তার রয়েছে নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস। বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদেরও অংশগ্রহণ ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই রাষ্ট্রের শাসকগোষ্ঠী স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও জাতিসত্তাসমূহের অধিকারকে উপেক্ষা করে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত তাদের ভূমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, তাদের ওপর নিপীড়ন, নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের দমন, পীড়ন, নির্যাতন বন্ধ করে পাহাড়ি জনগণের ন্যায্য দাবি পূর্ণস্বায়ত্তশাসন মেনে নিন। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে জাতিসত্তা ও কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে জনগণের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করুন।

সমাবেশের সভাপতি ফয়জুল হাকিম বলেন, বিরোধী দল ও মত দমন করে হাসিনা সরকার এক তরফা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার চক্রান্ত সম্পন্ন করতে চলেছে।গণগ্রেফতার করে কারাগারগুলো বিরোধী দল কর্মীদের দিয়ে ভরে ফেলা হয়েছে। জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করার অধিকার কেড়ে নেয়ার সরকারী চক্রান্ত প্রতিরোধ করতে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। জনগণকে গোলাম বানানোর এই চক্রান্ত রুখে দাঁড়াতে হবে।
জনগণের হাতে ক্ষমতা আনতে তিনি গণআন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানের পথে এগিয়ে নেয়ার আহবান জানান।

কাজী ইকবাল বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে ২৮ অক্টোবর বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে, গুলিবর্ষণ করে ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পন্ড করে দিয়েছে।এই ক্র্যাকডাউনে বিএনপি কর্মী, একজন পুলিশ সদস্য ও একজন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে।বিএনপি নেতৃত্ব ও কর্মীদের ‘সন্ত্রাসী’ তকমা লাগিয়ে সরকার দেশব্যাপী চরম দমন পীড়ন চালাচ্ছে। পুলিশী দমন পীড়নের বিরুদ্ধে জনগণকে প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, চাল ডাল তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনগণের জীবন আজ বিপর্যস্ত।সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।হাসিনা সরকার সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী, গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সেবা করে চলেছে।
এহতেশাম ইমন বলেন,দমন পীড়ন করে হাসিনা সরকারের গদী দখলে রাখার বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজকে দাঁড়াতে হবে।গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধির আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে বলেন,ছাত্র সমাজ আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের পাশে থাকবে।
সমাবেশে শেষে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পল্টনে গিয়ে শেষ হয়।

সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন