কাপ্তাইয়ে পাহাড়ি কিশোরী ধর্ষণের প্রতিবাদে কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ
সিএইচটি নিউজ ডটকম
কুদুকছড়ি (রাঙামাটি): রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের প্রতিবাদ কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি), ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার সময় বড় মহাপুরুম উচ্চ বিদ্যালয় ফটক থেকে মিছিল শুরু হয়ে কুদুকছড়ি বাজার প্রদক্ষিণ করে ইউপিডিএফের কার্ষালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পিসিপি রাংগামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক কুনেন্টু চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি অনিল চাকমা, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি কাজলী ত্রিপুরা, পিসিপি’র সাবেক কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি বাবলু চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা শাখার সদস্য মন্টি চাকমা ও পিসিপি রাঙামাটি সদর থানার সভাপতি নিকন চাকমা।
বক্তারা বলেন, ১৬ ডিসেম্বর সারাদেশ যখন বিজয় উল্লাসে মাতোয়ারা তখনই সেটলার বাঙালিরা কাপ্তাইয়ে পাহাড়ি কিশোরী ধর্ষণ করে বিজয় উল্লাস করছে। একইভাবে গতবছর বিজয় দিবসের আগের দিন ১৫ ডিসেম্বর ছবি মারমাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি নারীরা যে কোথাও নিরাপদ নয় গতকাল কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় তা আবারো প্রমাণিত হলো। সরকার বিজয়ের দিনেও পাহাড়িদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। গতবছর বিজয় দিবসে বগাছড়িতে পাহাড়ি গ্রামে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করে বিজয় উল্লাস করেছিল সেনা সেটেলাররা।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ধর্ষণের পর মেডিকেল রিপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারের গোপন নির্দেশনা জারি থাকায় ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়না। পার্বত্য চট্টগ্রামে এযাবত সংঘটিত ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত দুর্বৃত্তদের শাস্তি না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটছে।
বক্তারা অবিলম্বে কাপ্তাইয়ে পাহাড়ি কিশোরী ধর্ষণের সাথে জড়িত মো: শাহ আলমসহ সকল ধর্ষককে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্টের উপর থেকে গোপন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এদিকে, বিক্ষোভ শেষে কুদুকছড়ি আর্মি ক্যম্প থেকে একদল সেনা সদস্য এসে পিসিপি নেতাদের ক্যাম্পে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে ক্যাম্প কমান্ডার (নাম জানা যায়নি) তাদের জানায় যে, “ঘটনাটি যেভাবে বলা হচ্ছে সেরকম নয়। আসল ঘটনাটি হচ্ছে কিশোরী তার বয়ফ্রেন্ডোর সাথে রাতে বাইরে ছিল। এটি অন্যরা দেখে ফেলায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারি হয়েছে। ধর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেনি।” অথচ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকায় পুলিশ শাহ আলমকে নামে একজনকে গ্রেফতার করে রিমান্ড দাবি করেছে।
একজন সেনা কমান্ডারের এমন বিকৃত তথ্যই প্রমাণ করে যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি নারী ধর্ষণের ঘটনাগুলো তাদের ইন্ধনেই ঘটছে এবং ধর্ষণের ঘটনাগুলো ধামাচাপা দিয়ে ধর্ষকদের রক্ষা করতে তারাই সদা তৎপর রয়েছে।
——————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।