কারাগারে লালত্লেং কিম বম’র মৃত্যুর বিচার দাবিতে ঢাকায় বম ছাত্র-জনতার প্রতিবাদী সমাবেশ

0


ঢাকা, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

রাষ্ট্রীয় হেফাজতে কারাগারে লালত্লেং কিম বম’র মৃত্যুর বিচার, আটক বম নারী ও শিশুদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং চিংমা খিয়াংকে ধর্ষণের পর হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকায় বম ছাত্র জনতার উদ্যোগে প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শনিবার (১৭ মে ২০২৫) বিকেল ৩ টায়, শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে ‘বম ছাত্র জনতা’র সংগঠক লাল রিথাং বমের সভাপতিত্বে ও রবেন বমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সাইদিয়া গুলরুখ, ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অলিউর সান, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদে কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক রূপসী চাকমা, লেখক-গবেষক পাভেল পার্থ, নারী সংহতির কেন্দ্রীয় সদস্য রেক্সোনা পারভীন সুমি, বাংলাদেশ যুব ফেডারেশনের যুগ্ম আহবায়ক গোলাম মোস্তফা, ঢাবি ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক সদস্য আবু রায়হান খান, কথা বলো নারীর আহ্বায়ক নুসরাত হক, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মোজাম্মেল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু, বম শিক্ষার্থী বমরাং চাং ও বম ছাত্র জনতার পক্ষে নিলিয়ান বমসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে কারাগারে লালত্লেং কিম বমের মৃত্যুর ঘটনা সংশ্লিষ্ট আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। লালত্লেং কিম বমসহ নিরপরাধ বম জনগোষ্ঠীর মানুষ হত্যার জবাব চাই। আটককৃত নিরপরাধ বমদের মুক্তি চাই। সাধারণ বমদের হয়রানি বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। কুকি-চীন ইস্যুতে পুরো বম জনগোষ্ঠীকে ভয়-ভীতি দেখানো বন্ধ করতে হবে। পাহাড়ে দখল, উচ্ছেদ, হত্যা বন্ধ করতে হবে।”

বক্তারা বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সেনাবাহিনী বম জনগোষ্ঠির ওপর নিরব হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন।

বক্তারা আরও বলেন, “বাংলাদেশ রাষ্ট্রে বাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠবাদী উগ্রতা এবং মুসলিম জাতীয়তাবাদী জুলুম কর্তৃত্ব ও দাপটের সাধারণ শিকার হচ্ছেন অপরাপর বাংলাদেশী আদিবাসী জাতিসত্তার মানুষ, নারী, শ্রমিক ও ভিন্ন মতের মানুষ। উগ্র জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর দাপট ও মিথ্যাচার, অপব্যাখ্যা, জাতি বিদ্বেষী ও নারী বিদ্বেষী আচরণ আমরা দেখছি।”

বক্তারা বলেন, “কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদ বর্বর নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে সেই জুলুমের ক্ষত এখনো শুকায় নাই। পতিত ফ্যাসিস্টের কালে যা যা হয়েছে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের পর এখনও সেই ফ্যাসিস্ট মানসিকতা আমলাতন্ত্র, বিভিন্ন প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়ে গেছে, দায়িত্বশীল ও পদধারীদের মনন-মগজে রয়ে গেছে। এখনও জনগণকে নির্যাতন করা হচ্ছে।”

সভাপতির বক্তব্যে লালরিথাং আথাং বলেন, “কারা হেফাজতে লালত্লেং কিম বমের মৃত্যু কোনো‌ স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। এই মৃত্যুর জন্য রাষ্ট্র দায়ী। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। জুমচাষী খেয়াং নারী চিংমা খেয়াং ধর্ষণ-হত্যার সাথে জড়িতদের বিচার চাই। কেন শিশুদের গ্রেফতার করা হয়েছে? কেন নিরপরাধ বমদের জামিন না দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে? সরকারের কাছে জবাব চাই। তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে আটক বম জনগোষ্ঠীর মুক্তি চাই। বম জনগোষ্ঠীর স্বাভাবিক জীবনে নিশ্চয়তাসহ পাহাড় থেকে সমতল সকলের জীবনের নিরাপত্তা চাই।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন লেখক-নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দীলিপ রায়, সংহতি জানিয়েছেন শিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান।

সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য এলাকা প্রদক্ষিণ করে আবার শাহবাগে এসে শেষ হয়।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More