কারাবন্দি আরেক বম’র মৃত্যু!

হাসপাতালের বেডে সাংময় বম (৫৫)। সংগৃহিত ছবি
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিইচটি নিউজ
রবিবার, ১ জুন ২০২৫
কেএনএফ সন্দেহে সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারের শিকার হয়ে কারাবন্দি অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকা লালসাং ময় বম (৫৫) নামে বম জাতিসত্তার আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে লালত্লেং কিম বম নামে একজনের কারাগারে মৃত্যু হয়েছিল।
আজ রবিবার (১ জুন ২০২৫) বিকাল সাড়ে ৪টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লালসাং ময় বম মৃত্যুবরণ করেন বলে জানা গেছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আলসারে ভুগছিলেন, পরে তা ক্যান্সারে রূপ নেয়। গত কয়েকদিন ধরে তিনি কারাগার থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাজতি স্ট্যাটাসে ভর্তি ছিলেন।
২০২২ সালে সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারের পর থেকে তিনি কারাগারে বন্দি অবস্থায় ছিলেন। তবে মৃত্যুর একদিন আগে গতকাল (৩১ মে) বিকেলে আদালতে তাঁর জামিন মঞ্জুর হয় বলে জানা গেছে।
লালসাং ময় বম-এর বাড়ি বান্দরবানের রুমা উপজেলার রুমানা পাড়ায়।
পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, সংময় বমের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হলেও তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
এর আগে গত ১৫ মে ২০২৫ লালত্লেং কিম বম (৩০) নামের এক যুবক অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রাম কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছিলেন।
উল্লেখ্য, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০২২ সাল থেকে কেএনএফ দমনের নামে সেনাবাহিনী অভিযানের নামে অন্যায় ধরপাকড়, বিচার বহির্ভুত হত্যাসহ বম জাতিসত্তার জনগণের ওপর অন্যায় দমন-পীড়ন শুরু করে। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে নাটকীয় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা ঘটলে কেএনএফ বিরোধী যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে বম জাতিসত্তার ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এ অভিযানে এখন পর্যন্ত শতাধিক বম নারী-পুরুষ-শিশুকে গ্রেফতার করে ব্যাংক ডাকাতির বিভিন্ন মামলায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তাদেরকে কয়েক দফায় বান্দরবান জেলা কারগার থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। নাবালক ৪ শিশুও এখনো তাদের মায়েদের সাথে কারাগারে বন্দি জীবন কাটাচ্ছে। এছাড়া অনেককে এখনো সেনা হেফাজতে রাখা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরবর্তী দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলে দেশে সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গীসহ অনেক কুখ্যাত সন্ত্রাসী কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও বম জাতিসত্তার নিরপরাধ নারী-পুরুষ-শিশুদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।