খাগড়াছড়িতে ও সাজেক পর্যটন সড়কে তিন সংগঠনের আধাবেলা অবরোধ সফলভাবে পালিত

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও নারী আত্মরক্ষা কমিটির ডাকে আজ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫) খাগড়াছড়ির গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও রাঙামাটির সাজেক পর্যটন সড়কে আধাবেলা অবরোধ কর্মসূচি সফলভাবে পালিত হয়েছে।
সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়ক, খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়ক ও খাগড়াছড়ি-সাজেক পর্যটন সড়কে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। সাজেক পর্যটন সড়কে অবরোধ কর্মসূচিতে এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ অংশগ্রহণ করেন।



গত ৭ সেপ্টেম্বর মানিকছড়ি-গুইমারা সীমান্তে তবলা পাড়ায় গুলি বর্ষণ ও সন্ত্রাসের সাথে জড়িত ৬ সশস্ত্র ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীকে গ্রেফতারের দাবিতে এবং সন্ত্রাসীদের রক্ষায় গুইমারার কালাপানিতে জনতার ওপর সেনাবাহিনীর হামলা-গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে তিন সংগঠন এই কর্মসূচি পালন করে। এর আগে মঙ্গলবার পর্যন্ত তারা সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল। কিন্তু সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করায় তারা এই অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল।
অবরোধের সমর্থনে পিকেটাররা খাগড়াছড়ি জেলা সদরের ফায়ার সার্ভিস এলাকা, গুইমারা, রামগড়, মানিকছড়ি এবং সাজেক পর্যটন সড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুড়ি ফেলে ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের মাধ্যমে অবরোধ পালন করেন। এছাড়াও খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কের খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা পরিষদ এলাকায় এবং বাঘাইছড়ির মারিশ্যা সড়কের ৯ কিলো এলাকায় স্থানীয়ভাবে অবরোধের সমর্থেনে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করা হয়েছে।


অবরোধের কারণে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ ছিল। খাগড়াছড়ি শহর থেকে দূরপাল্লার কোন যান ছেড়ে যায়নি। সাজেক পর্যটন সড়কেও বন্ধ ছিল সকল প্রকার যান চলাচল। খাগড়াছড়ি শহরেও যান চলাচল ছিল সীমিত।
অবরোধ চলাকালে বড় কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি মিঠুন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা আহ্বায়ক এন্টি চাকমা এবং নারী আত্মরক্ষা কমিটির মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সদস্য সচিব পাইনু মারমা এক যৌথ বিবৃতিতে আধাবেলা অবরোধ সফল করায় সকল যানবাহন মালিক সমিতি, শ্রমিক সংগঠন ও সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, তবলা পাড়ায় হামলাকারী ৬ সশস্ত্র ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করে সেনাবাহিনী প্রতিবাদকারী জনতার ওপর যেভাবে হামলা-গুলি চালিয়ে সন্ত্রাসীদের উদ্ধার করে নিয়ে গেছে তা নজিরবিহীন। এ ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনাবাহিনী কর্তৃক সন্ত্রাসীদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে।


তারা সেনা ও ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং শাসকগোষ্ঠির সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে তবলাপাড়ায় সশস্ত্র কর্মকাণ্ড চালাতে যাওয়া ৬ ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা, কালাপানিতে জনতার ওপর হামলা-গুলিবর্ষণে জড়িত সেনা সদস্যদের শাস্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাশাসন প্রত্যাহারপূর্বক গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি ও ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ভেঙ্গে দেয়ার দাবি জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।