খাগড়াছড়িতে ৮ম শ্রেণির পাহাড়ি ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় মামলা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়ায় ৮ম শ্রেণিতে পড়য়া পাহাড়ি ছাত্রীকে (১৪) গণধর্ষণের ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা দাযের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই ২০২৫) ভুক্তভোগীর পিতা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন (যার মামলা নং-৪)।
মামলায় উল্লেখিত আসামিরা হলেন- ১। মো. মনির ইসলাম (৩৫), পিতা-লাল মিয়া, ২। মো. আরমান ইসলাম (৩২), পিতা-মৃত মো. আব্দুল, ৩। মো. সাদ্দাম হোসেন (২৯), পিতা-মৃত মোখলেছুর রহমান, ৪। মো. সোহেল ইসলাম (২৩), পিতা- নবীন মিস্ত্রী, ৫। মো. ইমাম ইসলাম (২৫), পিতা-মো. আলম ইসলাম ৬। এনায়েদ হোসেন (২৫), পিতা- রুহুল আমিন, সর্বসাং-ভাইবোনছড়া বাজার এলাকায়, থানা-খাগড়াছড়ি সদর, জেলা-খাগড়াছড়ি।
মামলার এজাহারে বাদী বলেন, “ আমার মেয়ে ভাইবোনছড়া এলাকার একটি বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। গত ২৭ জুন ২০২৫ দুপুর অনুমান ০২.০০টার সময় আমার মেয়ে (১৪) রথযাত্রা পূজা উৎসব পালন করার জন্য খাগড়াছড়ি সদর থানাধীন ভাইবোনছড়া বাজার সংলগ্ন জগন্নাথ মন্দিরে যায়। পূজা অনুষ্ঠান শেষে আমার মেয়ে জগন্নাথ মন্দির হইতে বের হয়ে তার চাচা অর্থাৎ আমার চাচাত ভাই মহিয়া ত্রিপুরাসহ খাগড়াছড়ি সদর থানাধীন ভাইবোনছড়া উন্নয়ন বোর্ড বাসভবন এর পাশে ভাড়া বাসায় যাওয়ার পথে আসামীরা আমার মেয়েকে অনুসরণ করে। পরবর্তীতে ২৭ জুন রাত অনুমান ৯.৩০টার সময় আসামীরা বর্ণিত ঘটনাস্থল আমার চাচাত ভাই মহিয়া ত্রিপুরার ভাড়া বাসায় গিয়ে আমার মেয়ে ও চাচাত ভাইকে প্রাণে হত্যা করার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরে আসামিরা আমার চাচাত ভাইকে এক রুমে নিয়া আটক করে রাখে এবং আমার মেয়েকে অপর একটি রুমে নিয়ে যায়। আসামীরা পার্শ্ববর্তী রুমের ভাড়াটিয়াদের রুমের দরজা বাহির থেকে লাগিয়ে দেয়, যাতে কোন লোক রুমের ভিতর হইতে বের হইতে না পারে। একপর্যায়ে আসামীরা আমার মেয়েকে প্রাণ নাশের হুমকি ধমকি প্রদান করে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। এতে আমার মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
“পরবর্তীতে পরের দিন অর্থাৎ গত ২৮ জুন ২০২৫ সকাল অনুমান ৭.৩০ টার সময় আমার মেয়ের জ্ঞান ফিরলে সে তার নিজ বাড়িতে ফিরে যায় এবং আমার চাচাত ভাইও তার নিজ বাড়িতে চলে যায়। একপর্যায়ে আমার মেয়ে উক্ত ঘটনায় দারুন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে গত ১২ জুলাই ২০২৫ সন্ধ্যা অনুমান ৭.৩০ টার সময় নিজেকে প্রাণে শেষ করার চেষ্টা করে। তখন আমরা তাকে চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার আমার মেয়েকে ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করেন। একপর্যায়ে আমার মেয়ে আমাদেরকে জানায় যে, বর্ণিত আসামীগণ ঘটনার তারিখ ও সময় ঘটনাস্থলে তাকে প্রাণ নাশের হুমকি ধমকি প্রদান করে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় মর্মে উপরোক্ত ঘটনার বর্ণনা দেয়।”
বর্তমানে তার মেয়ে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন।
এদিকে, ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি এনায়েদ হোসেন, আরমান ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন, ইমাম ইসলামকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।