গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের ৫ম কেন্দ্রীয় সম্মেলনে যোগ দেয়ার আহ্বান

নিউজ ডেস্ক ॥ আগামী ৫ এপ্রিল রাঙামাটির কুদুকছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রামের তরুণ-যুবকদের লড়াকু সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৫ম কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সংগঠনটির সভাপতি মাইকেল চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক অংগ্য মারমা এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে যোগ দিয়ে অনুষ্ঠান সফল করতে যুব সমাজের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
তারা জানান রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান তথা সারা পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে কয়েক হাজার যুবক যুবতী এই সম্মেলনে যোগ দেবেন। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ সমতলের অন্যান্য জেলা থেকেও প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।
সম্মেলন উপলক্ষে ২০ মার্চ প্রকাশিত এক প্রচারপত্রে বলা হয়েছে, ‘জাতির এই চরম দুর্দিনে যে যুবক হতাশ হয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকে সে যুবক নয়, যুবক নামের কলঙ্ক। যে জাতির যুব সমাজ অতীতে মহাপরাক্রমশালী বৃটিশ রাজের বিরুদ্ধে যুগব্যাপী সফল সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ রচনা করেছে, তাকে সন্ধি করতে ও পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বতন্ত্র সত্তা মেনে নিতে বাধ্য করেছে, যে জাতির অকুতোভয় তরুণরা মুক্তির নেশায় পাগল হয়ে বার বার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, মৃত্যুকে তুচ্ছ করে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছে — সে যুব সমাজের উত্তরাধিকারী হয়ে আমরা এ সময় ভীরু, কাপুরুষ ও অপদার্থের মতো পড়ে থেকে তাদের মহান সংগ্রামী ঐতিহ্য ও আত্মবলিদানকে কলঙ্কিত করতে পারি না। যে যৌবন দেশমাতৃকার কল্যাণে লাগে না, যে যৌবন ধুঁকে ধুঁকে মরে, ধিক সে যৌবনকে।’
উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামের যুব সমাজকে সংগঠিত করতে ২০০২ সালের ৫ এপ্রিল গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম গঠিত হয়েছিল। প্রথমে এর নাম ছিল পাহাড়ি যুব ফোরাম। পরে ২০০৫ সালের ১৩ মে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সম্মেলনে সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে সর্বসম্মতিক্রমে বর্তমান নামটি গ্রহণ করা হয়।
প্রচারপত্রে বলা হয়, ‘আজ থেকে চৌদ্দ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের যুব সমাজ যখন দিকভ্রান্ত, গভীর হতাশায় নিমজ্জিত, শাসকগোষ্ঠী ও তাদের দালালরা যখন যুব সমাজকে মদ-জুয়া-হিরোইনে আসক্ত করে সমাজ জাতি ও আন্দোলনকে চিরতরে ধ্বংস করে দিতে উদ্যত, তখনই এক ঐতিহাসিক গুরু দায়িত্ব কাঁধে নিতে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জন্ম হয়েছিল।’
পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখল বিরোধী আন্দোলনসহ সরকারের দমননীতির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সংগঠনটি মদ, জুয়া ইত্যাদির বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করেছে। এছাড়া স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে রাস্তাঘাট সংস্কার, ব্রিজ নির্মাণ, শহর পরিচ্ছন্ন রাখা, ধান কাটা মৌসুমে চাষীদের সহযোগিতা প্রদান, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন ইত্যাদি কর্মকান্ডের সাথে ডিওয়াইএফ নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছে।
সংগঠনটি বরাবরই সরকারের দমনপীড়নের শিকার হয়েছে। গঠনের পর থেকে আজ পর্যন্ত বহু নেতাকর্মীকে কারাবরণ করতে হয়েছে, ও অনেককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। গত বছর খাগড়াছড়িতে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জিকো ত্রিপুরাসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। বর্তমানে তিনি ও অন্যান্যরা জামিনে মুক্ত রয়েছেন।
নীচে প্রচারপত্রটি হুবহু দেয়া হলো:
———————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।