জুলাই-আগস্টে পার্বত্য চট্টগ্রামে ঘটনাবলী নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে

0

ডেস্ক রিপোর্ট, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বাংলাদেশে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট সংঘটিত ঘটনাপ্রবাহ অনুসন্ধানের পর ঘটনাবলী বিশ্লেষণ করে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের(ওএইচসিএইচআর) দফতর দীর্ঘ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ প্রতিবেদনে ওই সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকালে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানা ঘটনাবলী বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু ঘটনা বিষয়েও তারা প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে।

গত বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) জেনেভা থেকে ওএইচসিএইচআর আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বিরোধ এবং প্রায়ই সেনাবাহিনীর সহায়তায় সমতল এলাকা থেকে বাঙালিদের পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থানান্তরের নীতি স্থানীয় সম্প্রদায়গুলিকে প্রান্তিক করে তুলেছে এবং দীর্ঘকাল ধরে সংগ্রামের সৃষ্টি করেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলো চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে। তবে বাংলাদেশ সরকার ‘আদিবাসী’ শব্দটি প্রত্যাখ্যান করে এবং সংবিধানের তাঁদের ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ হিসেবে উল্লেখ করে। ১৯৯৭ সালে একটি ‘শান্তিচুক্তি’ স্বাক্ষরিত হলেও তা কখনো সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি এবং সেনা উপস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ সংঘাত অব্যাহত রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, দেশের অস্থিরতার পরের দিনগুলিতে পূর্ববর্তী সরকারের আনুগত্যের অভিযোগে ‘আদিবাসী’ জনগণ বাঙালিদের দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছিল।

কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারণার মাধ্যমে জুলাই ২০২৪ এর মাঝামাঝি থেকে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। এসব প্রচারণার মধ্যে একটি মিথ্যা দাবি ছিল যে একজন ‘আদিবাসী’ শিক্ষার্থীকে সুবিধা দিয়ে একজন বাঙালি শিক্ষার্থীকে ভর্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, যদিও প্রকৃতপক্ষে উভয়ই ভর্তি হয়েছিল। এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য বিদ্বেষমূলক বক্তব্যকে উসকে দেয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি গোষ্ঠিগুলোর দ্বারা স্থানীয়দের ওপর ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাত্রা বাড়ায়।

৫ আগস্টের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে বিক্ষোভের সময় এবং তার পরেও স্থানীয় ইস্যু, বিশেষ করে বেসামরিকীকরণের দাবিকে কেন্দ্র করে গ্রাফিতি প্রচারণা দেখা যায়। সেনাবাহিনী এসব গ্রাফিতি মুছে ফেলে এবং ভিন্নমত দমনে অ্যাকটিভিস্টদের আটক করে। এসব পদক্ষেপ সম্প্রদায়কে আরও ব্যাপকভাবে একত্রিত হতে বাধা সৃষ্টি করে। তীব্র দমন-পীড়নের ভয়ে অংশগ্রহণের মাত্রা কমে যায়।

সাক্ষীদের বর্ণনা অনুযায়ী, ৫ আগস্ট বান্দরবানে সহিংসতা তীব্র হয়ে ওঠে, যেখানে ‘আদিবাসী ও বাঙালি সম্প্রদায়ের সদস্যরা বিক্ষোভে অংশ নেয়। কিছু সশস্ত্র বাঙালি গোষ্ঠী ট্রাকে করে এসে স্থানীয় এক সংসদ সদস্যের বাসভবনে হামলা চালায় এবং একজন ‘আদিবাসী’ সম্প্রদায়ের সদস্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More