তবলাপাড়া-কালাপানিতে জনতার ওপর সেনা-সন্ত্রাসীদের হামলা-গুলির প্রতিবাদে মানিকছড়িতে জনসমাবেশ

0


মানিকছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সন্ত্রাসীদের রক্ষক সেনা সদস্যদের বিচার চাই” এই শ্লোগানে তবলাপাড়ায় সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণ, জনতার হাতে আটক সন্ত্রাসীদের মুক্তিদান ও কালাপানিতে জনতার ওপর হামলা-গুলির প্রতিবাদে এবং ৬ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে জনসমাবেশ করেছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও নারী আত্মরক্ষা কমিটি।

আজ সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকাল ১০টায় মানিকছড়ির তবলাপাড়া এলাকায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি আনু মারমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উক্যচিং মারমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) মানিকছড়ি ইউনিটের সংগঠক ক্যহ্লাচিং মার্মা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতি চাকমা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক শান্ত চাকমা, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারন সম্পাদক অংহ্লাচিং মার্মা, খাগড়াছড়ি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক প্রাঞ্জল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সদস্য রিকেন চাকমা, জনপ্রতিনিধি মিসেস্ ম্রাশে মার্মা প্রমুখ। এছাড়া মঞ্চে আরো উপস্থিত ছিলেন ইউপিডিএফ সংগঠক নিশান মার্মা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি উজাই রোয়াজা। সমাবেশে নারী আত্মরক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে দুই হাজারের অধিক জনগণ স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশ শুরুর আগে বিপ্লবী গণসংগীত বাজিয়ে সমাবেশস্থলে সংগ্রামী আবহ তৈরি করা হয়।


সমাবেশ শুরুতে গত ৭ সেপ্টেম্বর সেনাসৃষ্ট ভাড়াটে সন্ত্রাসী এবং সেনাবাহিনীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে যারা বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাদের সকলকে স্ট্যান্ডিং ওভেশনের মাধ্যমে সম্মান জানানো হয়।

সমাবেশে ইউপিডিএফ সংগঠক ক্যহ্লাচিং মারমা উপস্থিত জনতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর তবলা পাড়ায় সেনাসৃষ্ট সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জনতার প্রতিরোধ সংগ্রামের অংশ হিসেবে আজকে আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। আমরা লড়াই করতে শিখেছি শুধু আজকে নয়। আমরা দীর্ঘ সময় ধরে সেই ব্রিটিশ, পাকিস্তানের আমল থেকে লড়াই সংগ্রাম করে আজকে এখানে দাঁড়িয়েছি রয়েছি।

তিনি বলেন, হামলা করে, হত্যা করে, সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে দমন করা যাবে না। পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা-সন্ত্রাস চালানোর জন্য ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী (মোত্তালেব বাহিনী) গঠন করা হয়েছে। যারা এই সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে হত্যা করে, সন্ত্রাস করে তারাই পার্বত্য চট্টগ্রামে আসল সন্ত্রাসী।

তিনি সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে গণপ্রতিরোধ, গণঅভ্যুত্থান হবে। সংগ্রাম করে আমরা অধিকার আদায় করবো। আপনারা বন্দুক দিয়ে, ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণের আন্দোলন বন্ধ করতে পারবেন না। অবিলম্বে এই ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ভেঙ্গে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণের সাথে আলোচনায় বসুন, জনগণের যে পার্টি রয়েছে তাদের সাথে আলোচনায় বসুন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধান খুব সহজ মন্তব্য করে ক্যহ্লাচিং মারমা বলেন, অপেশাদার ও প্রমোশনলোভী সেনাবাহিনীর একটি অংশের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে যদি সেনাশাসন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়, সেটলারদের যদি সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসন করা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে যদি স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে যদি ভূমি অধিকার দেওয়া হয় তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধান খুব সহজে হয়ে যাবে।

তিনি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, যখন তবলা পাড়ায় হামলা চালানো হয়, যখন সেনা সৃষ্ট ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীরা সশস্ত্রভাবে এসে জনগণের ওপর হামলা করে তখন আপনারা নিশ্চুপ থাকেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন না। এই নিশ্চুপ থাকার জন্য প্রশাসনকে জবাব দিতে হবে।

ক্যহ্লাচিং মারমা সরকার ও প্রশাসনের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, অনতিবিলম্বে যদি তবলাপাড়ায় হামলাকারী ৬ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা না হয় তাহলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ওপর যদি আবারো হামলা, নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হয় তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ হাতগুটিয়ে ঘরে বসে থাকবে না।

জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আজকে এখানে আমরা সমবেত হয়েছি কোন আনন্দ করার জন্য নয়, আমরা প্রতিরোধ সংগ্রামের জন্য এখানে সমবেত হয়েছি।

আমরা কোন ভয় পাই না উল্লেখ করে ক্যহ্লাচিং মারমা বলেন, সেদিন আমাকে মারার জন্য সেনাসৃষ্ট সন্ত্রাসীরা তবলা পাড়ায় এসেছিল। সিন্দুকছড়ি জোন কমাণ্ডার নিজেই তা স্বীকার করেছেন।


তিনি জোন কমাণ্ডারের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাকে মেরে ফেলার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে? আমি যদি অন্যায় করে থাকি তাহলে আপনি আমাকে গ্রেফতার করে আইনের হাতে তুলে দিতে পারেন, কিন্তু আমাকে হত্যার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে? মনে রাখবেন, এই সন্ত্রাস, এই অন্যায়ের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম একদিন জ্বলে উঠবে, জনগণ রুখে দাঁড়াবে। তখন এই জোন কমাণ্ডার, ব্রিগেড কমাণ্ডারদেরকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

তিনি বলেন, সেনা ও ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শুধু তবলাপাড়া-কালাপানিতে নয়, ইতিপূর্বে কাউখালী, লক্ষীছড়িসহ বিভিন্ন স্থানেও গণপ্রতিরোধ হয়েছিল। আগামীতে যদি এ ধরনের কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হয় তাহলে জনগণ অবশ্যই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

নীতি চাকমা বলেন, আন্দোলন সংগ্রামের নারীরাও পিছিয়ে নেই তা তবলা পাড়ায় নারীরা সেনা-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে প্রমাণ দিয়েছে। তিনি বলেন পাহাড়ের সেনা অপারেশনের কারণে নারীরা জুমে কাজ করতে যেতে পারে না, বাড়িতে নিরাপদে থাকতে পারে না। বিগত সময়ে সেনা অপারেশনের সময় অনেক মা-বোন ধর্ষণ-নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ’৯৬ সালে লে. ফেরদৌস গং কর্তৃক পাহাড়ের নারী নেত্রী কল্পনা চাকমাকে অপহরণ করে গুম করা হয়েছে, যার সন্ধান রাষ্ট্র এখনো দিতে পারেনি। তিনি তবলাপাড়া ও কালাপানিতে সেনা-সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধকারী নারীদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং আগামী দিনে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বলিষ্ট ভূমি রাখতে নারী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।

শান্ত চাকমা উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, তবলাপাড়া-কালাপানিতে সেনা-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আপনারা যেভাবে প্রতিরোধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন তা শুধু সেনা, সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করেনি, আগামী দিনের পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের একটি মাইলফলক রচনা করেছেন। আমাদের আগামী প্রজন্ম আপনাদের এই প্রতিরোধ সংগ্রামকে অনুসরণ করবে এবং এর থেকে শিক্ষা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে। আপনাদের এই সাহসীকতা সত্য ও ন্যায়ের বিজয় হয়েছে, পরাজিত হয়েছে শাসকগোষ্ঠীর সকল অপশক্তি। যেই অপশক্তি পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে নানা কৌশলে নিপীড়ন-নির্যাতন, খুন-গুমসহ নানা অত্যাচার চালিয়ে আসছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা দেখতে পাই, বান্দরবানে নিরীহ বম জনগোষ্ঠীর ওপর কী নির্মম দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে। সেখানে ৫ম শ্রেণীর ছাত্র ভান থাং পুই পর্যন্ত রক্ষা পায়নি। কারাগারে ৩ জন নিহীর বম মৃত্যুবরণ করেছেন। এখনো অনেক বম কারাবন্দি রয়েছেন। আজকের এই সমাবেশ থেকে কারাবন্দি বমদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাই।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ে শান্ত চাকমা বলেন, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে দূরে সরিয়ে রেখে পূর্বের ফ্যাসিস্টদের মতো নিপীড়ন-নির্যাতন জারি রেখেছে। সেনাবাহিনী ও তাদের সৃষ্ট ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের দিয়ে খুন, গুম, ধরপাকড়, নিপীড়ন-নির্যাতন আগের মতোই রাখা হয়েছে।

তিনি শাসকগোষ্ঠির সকল অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

তিনি অবিলম্বে তবলা পাড়ায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে আসা ৬ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার এবং কালাপানিতে জনতার ওপর হামলা-গুলি বর্ষণকারী সেনা সদস্যদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।

প্রাঞ্জল চাকমা বলেন, পাহাড়ে যে সমস্যা তা একটা রাজনৈতিক সমস্যা। সরকার চাইলে আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হতো। কিন্তু এদেশের সরকার তথা শাসকগোষ্ঠি তা না করে সেনাবাহিনী ও তাদের সৃষ্ট সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে পাহাড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি জিইয়ে রেখেছে। এতেই প্রমাণ হয় বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠির চরিত্র এক ও অভিন্ন। তারা বরাবরই পাহাড়িদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়। কাজেই, আমাদের একমাত্র আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।

তিনি আরো বলেন, একটি দেশে দুই শাসন ব্যবস্থা চলছে। সমতলে এক শাসন আর পাহাড়ের জন্য আলাদা শাসন। এদেশের শাসকগোষ্ঠী পাহাড়কে কারাগারে পরিণত করে রেখেছে। ফলে এখানে অধিকারের পক্ষে যারা কথা বলবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করবে তাদের উপর সেনাবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে দমন করা হয়।

তিনি তবলা পাড়ার গণপ্রতিরোধ থেকে শিক্ষা নিয়ে সকল ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শাসকগোষ্ঠির নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

রিকেন চাকমা বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা শুধু রাজনৈতিক কর্মীদের দায়িত্ব নয়, এটা জনগণেরও দায়িত্ব। এই সমাবেশে যারা উপস্থিত হয়েছেন আপনাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে। আপনারা যদি সত্য ও ন্যায়ের জন্য লড়াই করেন, যদি জাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই লড়াই করেন, তাহলে আপনারা রাজনীতি না করলেও একটা সময় এসে তা আন্দোলনের স্রোতে মিলে যাবে, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে উঠবে।

তিনি আরো বলেন, আজকে যারা সেনাবাহিনী-সরকারের দালালি করে ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, যারা তথাকথিত বিভিন্ন জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত হয়ে সমাজকে কুলুষিত করছে তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।

তিনি আরো বলেন, তবলাপাড়া ও কালাপানিতে সেনা-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আপনারা শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগণ যেভাবে প্রতিরোধ সংগ্রাম করছেন তা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। আন্দোলন সফল করার জন্য ছাত্র-যুবক-নারীসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে হয়। তিনি আগামী দিনের আন্দোলনেও এলাকার জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অংহ্লাচিং মারমা সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা আমাদের আন্দোলনের প্রতি বিশ্বাস রাখবেন। আমরা পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শেষ রক্ত বিন্দু থাকা পর্যন্ত লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত রাখবো। সত্য ও ন্যায়ের বিজয় দেরিতে হলেও সফলতা আসবেই। সত্য ও ন্যায় যদি হেরে যেত তাহলে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না, ’৫২এর ভাষা আন্দোলন হতো না, ফ্যাসিস্ট হাসনা সরকারের পতন ‘২৪’র জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রদের বিজয় হতো না। শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার কারণেই হাসিনার পতন হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামেও আমাাদের ঐক্যবদ্ধভাবে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

তিনি পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার অধিকার আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য উপস্থিত ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানান এবং অবিলম্বে তবলাপাড়ায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ৬ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতারপূর্বক শাস্তি এবং সন্ত্রাসীদের রক্ষক সেনা সদস্যদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সেনাবাহিনীর মদতপুষ্ট ৬ জন সশস্ত্র ঠ্যাঙাড়ে মানিকছড়ি-গুইমারা সীমান্তবর্তী তবলাপাড়ায় প্রবেশ করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করলে এলাকাবাসী তাদের প্রতিরোধ করে এবং আটক করে। পরে সেনাবাহিনী সেখানে উপস্থিত হয়ে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করে তাদেরকে জনতার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এতে বিক্ষুব্ধ জনতা কালাপানি এলাকায় প্রতিবাদ জানালে সেনাবাহিনী হামলা-লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীদের নিরাপদে গাড়িতে করে নিয়ে যায়। এ সময় সেনাবাহিনীর হামলায় অনেকে আহত হন।

উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতাারের দাবিতে ইতোমধ্যে তিন সংগঠন বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু প্রশাসন এখনো সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More