দিনাজপুরে সান্তাল পল্লীতে হামলা, বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের নিন্দা জানিয়েছে ৮ গণসংগঠন
সিএইচটিনিউজ.কম
পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনরত আট গণসংগঠন (গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, সাজেক নারী সমাজ, সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটি, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি ও প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়াড) আজ ২৪ জানুয়ারি শনিবার সংবাদপত্রে দেয়া এক বিবৃতিতে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে সান্তাল গ্রামে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া, লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
সংবাদপত্রে দেয়া বিবৃতিতে আট গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে পার্বতীপুরে একটি সান্তাল গ্রামে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনাকে উন্মত্ত ক্ষমতা প্রদর্শন মন্তব্য করে আরও বলেছেন, ক্ষমতার সাথে যুক্ত না থাকলে কারো পক্ষে এভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো সম্ভব নয়। দুর্বল প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সান্তালদের ন্যায়সঙ্গত প্রতিরোধকে ভিন্নভাবে চিত্রিত করে তাকে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ আখ্যা দিয়ে দুর্বৃত্তরা মূল ঘটনাকে আড়াল করতে চাইছে।
আট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে এ ধরনের হামলার পেছনে ক্ষমতাসীন সরকারকে দায়ী করে বলেন, বর্তমান সরকার বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে ভিন্ন ভাষা-ভাষী জাতি ও সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে। তার কারণে জাতি বিদ্বেষী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ফণা তুলে সংখ্যালঘু জাতিসমূহের ওপর ছোবল মারতে প্ররোচিত হচ্ছে। তার শিকার হচ্ছে দিনাজপুরের পার্বতীপুরের দুর্বল প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সান্তাল গ্রামবাসী। দেশের অন্যত্রও একই চিত্র। গত ১৬ ডিসেম্বর বগাছড়িতে ও ১০ জানুয়ারি খোদ রাঙ্গামাটি জেলা সদরে হামলা ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর মূলেও রয়েছে একই কারণ।
পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনরত আট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে সান্তাল জনগণের ভূমি রক্ষার ন্যায় সঙ্গত আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ও সংহতি ব্যক্ত করেছেন এবং অবিলম্বে হামলা ও লুটপাটে জড়িত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আট সংগঠনের পক্ষে বিবৃতিতে সাক্ষর করেছেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি মাইকেল চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি থুই ক্য মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী নিরূপা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভানেত্রী সোনালী চাকমা, সাজেক নারী সমাজের সভানেত্রী নিরূপা চাকমা (২), সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি জ্ঞানেন্দু চাকমা, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভানেত্রী কাজলী ত্রিপুরা ও প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের সদস্য সচিব আনন্দ প্রকাশ চাকমা।
উল্লেখ্য, আজ ২৪ জানুয়ারি শনিবার সকাল ১০টার দিকে দিনাজপুরের মোস্তাফাপুর ইউনিয়নের পার্বতীপুর থানার হাবিবপুর গ্রামের ১০টি সান্তাল বাড়ি দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে ছাই করে দেয়। এছাড়া দুর্বত্তরা পুরো গ্রামের বাড়িঘর ভাংচুর চালিয়ে তছনছ করে দেয় এবং গরু-ছাগলসহ তাদের সকল সহায় সম্পত্তিও লুট করে নিয়ে যায়।
আট গণসংগঠনের কনভেনিং কমিটির সদস্য সচিব অংগ্য মারমার স্বাক্ষরে এ বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে।
————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।