ধর্ষণ ও ভূমি বেদখলের বিরুদ্ধে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ সমাবেশ

রাঙামাটি ।। ‘বার বার ধর্ষণ কেন, শেখ হাসিনার জবাব চাই’ শ্লোগানে লংগদুতে কলেজ ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এবং বান্দরবান চিম্বুক পাহাড়ে পর্যটন স্থাপনা নির্মাণের নামে পাহাড়ি উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রবিবার (১১ অক্টোবর) সকাল ১১টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ) এর রাঙামাটি জেলা শাখার ব্যানারে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সহ-সভাপতি রিতা চাকমার সভাপতিত্বে ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা কমিটির অন্যতম সদস্য মিকি চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পিসিপির জেলা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নিকন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রিটন চাকমা ও স্থানীয় কার্বারী সভাপূর্ণ চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, লংগদুতে কলেজ ছাত্রী ধর্ষণের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম আদালতে আত্মসমর্পণ করলেও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্টে সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক বহু ঘটনায় ভুরিভুরি প্রমান থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় পক্ষপাতিত্বের কারণে এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা হয়নি। যার ফলে বার বার ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। তারা ছাত্রী ধর্ষণকারী আব্দুর রহিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বক্তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত নিপীড়ন চালাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিনিয়ত নারী ধর্ষণ-নির্যাতন, দমন-পীড়ন, খুন, গুমের মতো ঘটনা জারি রেখেছে। যার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবত সংঘটিত ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যার সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন, রাবার প্লান্টেশন, বনায়ন, সেনা-বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনার নামে বিভিন্ন কোশলে পাহাড়িদের জায়গা জোরপূর্বক দখল করা হচ্ছে। সম্প্রতি বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে সেনাবাহিনী ও ভূমিদস্যু সিকদার গ্রুপ মিলে পাঁচতারকা হোটেলসহ নানা স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চিম্বুক পাহাড়ে সেনাবাহিনীর পর্যটন স্থাপনের কারণে ইতোমধ্যে স্থানীয় অনেক ম্রো জাতিসত্তার লোকজন উচ্ছেদের শিকার হয়েছেন। আবারো নতুন নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা হলে সেখানে যুগ যুগ ধরে বসবাসরত ম্রোদেরকে চিরতরে উচ্ছেদ হতে হবে। বক্তারা অনতিবিলম্বে চিম্বুক পাহাড়ে পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করে ম্রো জাতিসত্তাদের কাছ থেকে বেদখলকৃত জমি ফিরিয়ে দেয়াসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখল বন্ধের জোর দাবি জানান।

বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী নির্যাতনসহ সকল ধরনের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়ানোর জন্য ছাত্র সমাজসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশে থেকে বক্তারা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, নারী নির্যাতন বন্ধ ও নারীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।