পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবি উত্থাপন দিবস উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ’র সমাবেশ

0

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ।। পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবি উত্থাপন দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার (১১ মার্চ ২০২২) দুপুর ১২.৪৫ টার দিকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়ার শিবমন্দির এলাকায় ইউপিডিএফ খাগড়াছড়ি সদর ইউনিটের উদ্যোগে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আপোষ চুক্তি নয়, পূর্ণস্বায়ত্তশাসনই অস্তিত্ব রক্ষার গ্যারান্টি এই স্লোগানে এবং আসুন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে জনগণকে ভীত সন্ত্রস্ত ও অধিকারহীন রাখার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হই, আন্দোলন গড়ে তুলি” এই আহ্বানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ’র জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জেলা সহসভাপতি লিটন চকামা ও পাাহড়ি ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি নরেশ ত্রিপুরা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৯৭ সালে ১০ মার্চ তিন সংগঠন পিজিপি, পিসিপি ও এইচডব্লিউএফ পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবি উত্থাপন করে সরকার ও জেএসএসকে আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছিল। কিন্তু জেএসএস নেতৃত্ব তিন সংগঠনের সতর্কবাণীকে তোয়াক্কা না করে সরকারের সাথে আপোষ চুক্তিতে উপনীত হয়েছে। ফলে এই চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার অর্জিত হয়নি।

তারা বলেন, চুক্তির নানা দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও দুই যুগেও সরকার পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করেনি। এর মাধ্যমে বোঝা যায় সরকার এই চুক্তির মাধ্যমে জেএসএস ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে। শুধু তাই নয়, ১৯৯৮ সালে খাগড়াছড়ির স্টেডিয়ামে জেএসএস’র অস্ত্র সমর্পণ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, সেনাবাহিনী ও বাঙালিরা পার্বত্য চট্টগ্রাম ছেড়ে কোথাও যাবে না, পাহাড়ি বাঙালি সবাই থাকবে। তাঁর এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সেদিনই সরকারের প্রতারণা সুস্পষ্ট হয়েছিল।

বক্তারা বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি স্থাপনের নামে চুক্তি করা হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি তো প্রতিষ্ঠা হয়নি, উপরন্তু চুক্তিপূর্ব অবস্থার চেয়েও ভয়াবহভাবে নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ধরপাকড়, খুন, মিথ্যা মামলায় জেলে প্রেরণ, রাত-বিরাতে ঘরবাড়িতে তল্লাশির নামে হয়রানি, ভূমি বেদখল ইত্যাদি অব্যাহতভাবে চলছে। কাজেই, পার্বত্য চুক্তিতে আর জনগণের মুক্তির কোন সম্ভাবনা নেই তা সকলের কাছে এখন পরিষ্কার হয়েছে। যার কারণে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রাসঙ্গিক হিসাবে সকলের সামনে প্রতীয়মান হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত জনগণের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এই পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের কোন বিকল্প নেই।

বক্তারা সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে ভীত সন্ত্রস্ত ও অধিকারহীন করে রাখার জন্য যতই ষড়যন্ত্র ও উস্কানিমূলক ভাতৃঘাতি সংঘাত জিইয়ে রাখুন না কেন কেন পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে দমিয়ে রাখা যাবে না। বক্তারা পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ও শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানান।

সমাবেশ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে স্বায়ত্তশাসিত এলাকা ঘোষণাসহ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও অন্যায় ধরপাকড় বন্ধ করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More