প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে ব্রিটিশ হাইকমিশনের তিন কূটনীতিকের খাগড়াছড়ি সফর

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আগামী ১৫-১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন-এর তিন কূটনীতিক খাগড়াছড়ি সফর করবেন বলে জানা গেছে। তবে এই সফরের সময় স্থানীয় প্রশাসনকে তাদের ওপর কড়া নজরদারি করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে বৃটিশ হাই কমিশনের সারা কুক, ক্যাট ওয়ার্ড ও ইলিয়েনর রোজ মুডি আগামীকাল ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে তিন দিনের সফরে খাগড়াছড়ি আসবেন।
তাদের সফরসূচিতে আগামীকাল সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, লিংক রোড পরিদর্শনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ এবং বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ম্যাটানিটি ওয়েটিং রুম পরিদর্শন শেষে বিকাল ৪টায় রাঙামাটির উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। বাকী দুই দিনের ভ্রমণসূচি সম্পর্কে জানা যায়নি।
তবে তাদের ওপর প্রশাসনের ও গোয়েন্দা সদস্যদের নজরদারি থাকার কারণে তারা স্বাধীনভাবে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলতে সক্ষম হবেন না বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ স্বাক্ষরিত দিপক কুমার শীল, সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা-এর বরাবরে লেখা এক চিঠিতে কূটনীতিকদের ওপর কড়া নজরদারির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চিঠির স্মারক নং-(স্মারক নম্বর: ০৫.৪২.৪৬০০.০০০.০১২.১৬.০০০২.২৪.৯৮৫)
চিঠিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক-৬ শাখা এর ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখের ৪৪.০০.০০০০.০০০.০৭৯.১৯.০০০১.২৫.৩১২ স্মারকের সূত্র উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের ও সূত্রোক্ত স্মারকের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন এর নিম্নবর্ণিত ০৩ (তিন) জন বিদেশি নাগরিক আগামী ১৫-১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা সফর করবেন।
চিঠিতে বলা হয়, ‘এমতাবস্থায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা সফরকালীন উক্ত বিদেশি নাগরিকদের সাথে স্থানীয় যে কোন ব্যক্তি/সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকসহ সকল কর্মকান্ডে জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকার জন্য জনাব দিপক কুমার শীল, সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা-কে নির্দেশক্রমে নিয়োগ করা হলো।’
উল্লেখ্য, কোন বিদেশী কূটনীতিক বা পর্যটকের স্থানীয় লোকজন অর্থাৎ পাহাড়িদের সাথে কথা বলার সময় অবশ্যই একজন সরকারী প্রতিনিধি উপস্থিত থাকার সরকারী নির্দেশ কয়েক বছর আগে থেকে জারী করা আছে।
২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জারি করা ১১-দফা গোপন নির্দেশনায় বলা হয়েছে: “কোন দেশী-বিদেশী ব্যক্তি/সংস্থা কর্তৃক পার্বত্য অঞ্চলে উপজাতীয়দের সাথে সাক্ষাত কিংবা বৈঠক করতে চাইলে স্থানীয় প্রশাসন এবং সেনাবাহিনী/বিজিবি এর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।”
সরকারের এই নির্দেশনা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী ও পাহাড়ি জনগণের জন্য অপমানজনক। এই নির্দেশনা পাহাড়ি জনগণকে শত্রু হিসেবে গণ্য করার সামিল।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।