রামগড়ে নভেম্বর মাস জুড়ে সেনা-বিজিবির অভিযান-টহল

0


রামগড় প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ

মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার পাহাড়ি অধ্যুষিত এলাকায় গত নভেম্বর মাস জুড়ে সেনাবাহিনী ও বিজিবি অভিযান ও টহল পরিচালনা করে জনমনে ভীতি সঞ্চার করে।  সেনা-বিজিবির এমন টহল অভিযানের কারণে এলাকার জনগণের স্বাভাবিক চলাফেরা, কাজ কর্মের ব্যাঘাত ঘটে। তাদের সব সময় আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করতে হয়েছে। 

নীচে নভেম্বর মাসে রামগড়ে সেনা-বিজিবি অভিযান, টহলের ঘটনাবলী সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো:

– ৩ নভেম্বর ২০২৫ রাত আনুমানিক ৩টার সময় ৪০ থেকে ৫০ জন সেনা সদস্য সোনাই আগা দিক থেকে এসে রামগড় উপজেলার হাচুক পাড়া ও নাঙ্গেল পাড়ায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালায়। তল্লাশির সময় সেনারা ইউপিডিএফ সংগঠক অর্জুন ত্রিপুরার বাড়িতে ঢুকে তন্ন তন্নে করে তল্লাশি করে। তারা পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে বার বার “বাড়িতে অস্ত্র আছে কিনা”, ইউপিডিএফ সদস্যরা কোথায় অবস্থান করছে” ইত্যাদি জানতে চায়।

তল্লাশি শেষে সেনারা কোনো কিছু না পেয়ে নাঙ্গেল পাড়ার দিকে চলে যায়।

এ সময় কিরণ ত্রিপুরা (ধীমান)ও সুলেন চাকমা সহ আরও চারজন ঠ্যাঙাড়ে দুর্বৃত্ত ছিলেন বলে জানা যায়।

– ৪ নভেম্বর লালছড়ি হয়ে সেনাবাহিনী টহল দেয় এবং মোতালেবের ফলজ বাগান এলাকায় তারা রাতে অবস্থান করে।

– ৫ নভেম্বর সেনাবাহিনী টহল অভিযান চালায়। তারা লালছড়ি পাড়ায় অবস্থান করে রাতে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

– ৯ নভেম্বর সকাল ১০টার সময় সেনাবাহিনী ও সেটলার বাঙালিরা খাগড়াবিল গ্রামে একত্রিত হয়। দুপুর ১২টার সময় একদল সেটলার রূপাইছড়ি পাড়া থেকে নয়ন চাকমা নামে একজনকে নিজ বাড়ি থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। তাকে খাগড়াবিলে নিয়ে মারধর করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। পরে রামগড় থানায় হস্তান্তর করার পর পুলিশী হেফাজতে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।

– ১২ নভেম্বর একদল বিজিবি সদস্য ট্রাক গাড়িতে করে এসে গরুকাটা গ্রামের রাজেন্দ্র ত্রিপুরার বাড়ি ঘেরাও করে। তবে তিনি কোন রকমে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। বিজিবি সদস্যদের সাথে সেটলার বাঙালিরাও ছিল বলে জানা যায়।

– ১৩ নভেম্বর সকাল ৭টার দিকে তৈইচালা ও বৈদ্য পাড়া বিজিবি ক্যাম্প থেকে ৪০ জনের একদল বিজিবি সদস্য লাচাড়ি পাড়া বৌদ্ধ বিহার এলাকায় তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান করে। তারা ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত সেখানে ছিল।   

– ১৫ নভেম্বর বিজিবির একদল সদস্য পিলাকঘাট এলাকায় বনবিহারের পাশে অবস্থান নিয়ে তাঁবু খাটিয়ে রাতযাপন করে।

– ১৭ নভেম্বর সেনাবাহিনীর একটি দল সালদা পাড়া এলাকায় সবুজ কোম্পানির বাগানে রাতে অবস্থান করে। অপরদিকে বাটনাতলী ক্যাাম্পের একদল সেনা সদস্য মরাকইল্যা বনবিহার এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি করে।

– ১৮ নভেম্বর সকাল ১০টা হতে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বাটনাতলী ক্যাম্পের ৪০/৪৫ জনের একদল সেনা সদস্য ছোট বেলছড়ি, বড় বেলছড়ি এলাকায় টহল অভিযান চালায়।

– ২১ নভেম্বর সকাল ১১টার সময় বাটনাতলী ক্যাম্প থেকে আসা ২৫ জনের একদল সেনা সদস্য সবুজ বাগান নামক স্থানে রাতযাপন করে।

– ২৪ নভেম্বর ২০২৫ রামগড়ে সেটলার কর্তৃক তুলে নিয়ে মারধর করার পর সেনাবাহিনীর মাধ্যমে থানায় হস্তান্তর করা নয়ন চাকমাকে পুলিশী হেফাজতে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতাল চিকিৎসা শেষে কিছু শর্ত সাপেক্ষে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেটলারদের মারধরে তার ডান হাত ভেঙে যায়।

– ২৫ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাটনাতলী ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য গ্লোব বাগান পর্যন্ত টহল অভিযান চালায়। অপরদিকে একই সময় বিজিবির একটি দল নাঙ্গেল পাড়া এলাকায় টহল দেয়।

– ২৭ নভেম্বর হাচুক পাড়া এলাকায় বিজিবি’র দুটি দল টহল অভিযান চালায়। তারা হেমন্ত ত্রিপুরা (রণি) নামে একজনের বাড়ি খোঁজ করে। এ সময় বিজিবি সদস্যরা হাচুক পাড়ায় স্কুল ও মন্দিরে গিয়ে ছবি তুলে নিয়ে যায় বলে জানা গেছে।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More