
কাউখালী(রাঙামাটি) প্রতিনিধি ।। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাক (পাকিস্তান) আগ্রাসনের ৭৪ বছর উপলক্ষে রাঙামাটর কাউখালীতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২০ আগস্ট ২০২১, শুক্রবার সকালে “ ‘দেশ বিভাগের’ নামে পাহাড়িদের সাথে প্রতারণার প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করুন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাক আগ্রাসন, রাষ্ট্রীয় দমন-নিপীড়ন ও জাতীয় অস্তিত্ব ধ্বংসের ষড়যন্ত্র রুখে দিন’’ শ্লোগানে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কাউখালী থানা শাখা যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সভায় বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগণ যুগ যুগ ধরে শাসক গোষ্ঠীর নিষ্পেষণের শিকার হয়ে আসছে। অথচ এক সময় তারা স্বাধীন ভূমির অধিকারী ছিলেন। তাদের স্বতন্ত্র আভাসভূমিকে ছলে-বলে-কৌশলে সংকুচিত করা হয়েছে। মোঘল আমল থেকে বৃটিশ শাসন পর্যন্ত পাহাড়িরা কিছুটা হলেও নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যকে সংরক্ষণ করতে পেরেছিল। কিন্তু ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের নামে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পাকিস্তানের সাথে অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে পাহাড়িদের পরাধীনতার যুগ শুরু হয়।
তারা বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির পর সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রামকে “বিশেষ অঞ্চল” হিসেবে মযাদা দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও ১৯৬২ সালে রাজাকার সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী একদিনের জন্য ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সে বিশেষ অঞ্চলের মযাদা সংবিধান থেকে খারিজ করে দেন। আর বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর সংবিধানে সংখ্যালঘু জাতিসত্তাগুলোকে তো স্বীকার করা হয়নি উল্টো বাঙ্গালী জাতীয়তা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পাহাড়িদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন-নিযাতনের মাত্রা অতীতের সকল রেকডকে ছাড়িয়ে গেছে অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, প্রতিনিয়ত সেটলার বাঙালিদের দিয়ে পাহাড়িদের ভূমি বেদখল করা হচ্ছে। নিরীহ জনগণকে খুন, গুম ও ধরপাকড় করা হচ্ছে। জেলে প্রেরণ করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত পাহাড়ি নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় পর্যটনের নামে পাহাড় কেড়ে নিয়ে স্থানীয় পাহাড়িদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে।
সভা থেকে বক্তারা শাসক গোষ্ঠীর এসব নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এবং যেকোন মূল্যে পিতৃভূমিকে রক্ষার অঙ্গীকার করেন।
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কাউখালী থানা শাখার ক্যথুই মার্মার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ-এর কাউখালী ইউনিটের সংগঠক অমিয় চাকমা ও বাবলু চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন কাউখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক পাইথুইমা মার্মা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কাউখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক সুমন চাকমা এবং গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কাউখালী শাখার সভাপতি থুইনু মং মার্মা।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।