কাউখালীতে সেটলার কর্তৃক জমি বেদখল চেষ্টার প্রতিবাদে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ

0
4

কাউখালী প্রতিনিধি ।। রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার পেরাছড়ায় সেটলার বাঙালি মো. পারভেজ গং কতৃক বিমলা চাকমাসহ ৬ জনের জমিতে অবৈধ প্রবেশ, গাছ কর্তন ও বেদখল প্রচেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কাউখালী উপজেলা শাখা।

আজ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, সোমবার মিছির পরবর্তী অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কাউখালী উপজেলা শাখার সভাপতি সুমন চাকমার সভাপতিত্বে ওসাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর প্রতিনিধি অমর চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তনুময় চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কাউখালী উপজেলা শাখার সভাপতি থুইনুমং মার্মা ও এলাকার জনপ্রতিনিধি মিনুচিং মারমা।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, কাউখালি উপজেলার ৩নং ঘাগড়া ইউনিয়নের পেরাছড়ায় মো. পারভেজ নামে এক সেটলার বাঙালি বিমলা চাকমার ১ একর সেগুন বাগান বেদখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। বিমলা চাকমা ২০০৯ সালে প্রতিময় চাকমার কাছ থেকে সেগুন বাগানসহ ওই জমি ক্রয় করেন। ঘিলাছড়ি মৌজায় অবস্থিত উক্ত জমির হোল্ডিং নম্বর হলো ১০৫/৮৬/১৬০। সেগুন বাগানটির বর্তমান বাজার ‍মূল্য আনুমানিক ১৫ লক্ষ টাকা। এছাড়া বিপন চাকমা, ইকন চাকমা, ছন্দক চাকমা, সুদত্ত চাকমা ও নিউটন চাকমার ৮ একর জায়গাও সেটেলাররা দখলের পাঁয়তারা করছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।

ঘিলাছড়ির বাসিন্দা মো. পারভেজ গত কয়েকদিন ধরেউক্ত জমি বেদখলের চেষ্টা চালাচ্ছে অভিযোগ করে তারা আরো বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি সে তার দলবলসহ জোরপূর্বক ১৪টি সেগুন গাছ কেটে নিয়ে যায়। বাধা দেয়া হলে সে উল্টো জমির মালিককে হুমকি দেয়। জমির মালিক এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত নালিশ দিলেও প্রশাসন বেদখলকারী সেটলারদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এছাড়া তিনি ঘাগড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. নাজিম উদ্দীনের নিকটও এব্যাপারে প্রতিকার চান। কিন্তু মো. নাজিম উদ্দীন এবং কাউখালি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদ সরকার উভয় পক্ষের মধ্যে বিষয়টি মিটমাট করার জন্য জমির মালিকের নিকট থেকে একটি সাদা কাগজে অগ্রিম সাক্ষর নিতে চেয়েছিলেন। বিমলা চাকমা এতে দুরভিসন্ধি রয়েছে মনে করে তা স্বাক্ষর অস্বীকার করেন। এভাবে প্রতিবাদের পর পারভেজ কয়েকদিন চুপ করে থাকলেও গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সে আবার বিমলা চাকমার ওই জমিতে অবৈধ প্রবেশ করে বেশ কয়েকটি সেগুন গাছ কেটে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে বিমলা চাকমার শ্বশুর নলিন্দ বিকাশ চাকমা থানায় গিয়ে অভিযোগ দেন। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ বেদখলকারীদের বাধা দিতে তৎক্ষণাৎ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। প্রশাসনের নির্লিপ্ততার সুযোগ নিয়ে মো. পারভেজ আজ (সোমবার) আবারও তার সহযোগী মো. মোজাম্মেল ও মো. বাহাদুরদের সাথে নিয়ে বিমলা চাকমার জমিতে অবৈধ প্রবেশ করে সেগুন গাছ কর্তন করেছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।

বক্তারা, উক্ত জমি বেদখল চেষ্টার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অতিসত্বর বেদখলকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার দাবি জানান এবং জমিটি বেদখল বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.