খাগড়াছড়ি : শিক্ষার্থীদের উপর চিহ্নিত হামলাকারীদের শাস্তিসহ ৪দফা বাস্তবায়নের দাবিতে আগামীকাল ৩০ জানুয়ারি থেকে ৩দিনের ক্লাশ বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (২৯ জানুয়ারি ২০১৮) ‘উগ্র সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ এর ব্যানারে শিক্ষার্থীদের এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।
“শিক্ষার সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত কর” এই শ্লোগানে সোমবার বেলা ২.৩০টার সময় খাগড়াছড়ি সদরের সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে জেলা পরিষদের সামনে গিয়ে তারা সমাবেশ করে।
সমাবেশে এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র সুব্রত ত্রিপুরার সঞ্চালনায় ৪দফা দাবি ও কর্মসূচি ঘোষণা করেন অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র এল্টন চাকমা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আদর্শ বিদ্যাপীঠ হিসেবে শিক্ষার যে সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকা দরকার তা আজ আমাদের কলেজে অনুপস্থিত। একটি কায়েমী স্বার্থবাদী মহল কলেজ প্রশাসন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে চিহ্নিত উগ্র সাম্প্রদায়িক দুর্বৃত্ত ও এলাকার মাস্তানকে দিয়ে শিক্ষাঙ্গনকে ধ্বংস করছে। সচেতন ছাত্র হিসেবে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর হাতে প্রাণ প্রিয় খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজকে জিম্মি হতে দিতে পারি না। কলেজকে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও দুর্বৃত্তায়ন থেকে মুক্ত করতে ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে- কলেজ এলাকায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; শিক্ষার জন্য কলেজ ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত ও শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করা; ২৭ জানুয়ারি তিন শিক্ষার্থীর উপর চিহ্নিত হামলাকারী এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আশরাফুল ইসলামকে বহিষ্কার ও পৌর কাউন্সিলর মাসুম রানার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং ক্যাম্পাসের ভেতরে বহিরাগত অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, গত ২৭ জানুয়ারি এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র আশরাফুল ইসলাম ও বাঙালি ছাত্র পরিষদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ও ২নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর মাসুম রানার নেতৃত্বে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সাধারণ ছাত্রদের একটি পাঠচক্রতে হামলা চালায়। বিনা কারণে ৩ ছাত্রকে মারধরসহ লাঞ্ছিত করে এবং ২ মিনিটের মধ্যে স্থান ত্যাগের হুমকি দেয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানালে এতে কোন সাড়া মেলেনি। উল্টোভাবে নির্যাতনের শিকার হওয়া ছাত্রদের উপর মিথ্যা দোষ চাপানোর চেষ্টা করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের পুলিশ ও সন্ত্রাসী মাসুম বাহিনী বাধা দেয়। এসময় পুলিশের সামনে মাসুম রানা পিস্তল হাতে ছিলেন।
এ বিষয়ে গতকাল ২৮ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ ড. মোঃ আব্দুর সবুর খানের নিকট লিখিতভাবে ৪ দফা দাবি পেশ করেছেন।
সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ-এর প্রতিনিধি অভিজিৎ ত্রিপুরার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
—————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।