চাকমা সার্কেলের রাণী য়েন য়েন’র উপর হামলায় নাগরিক সমাজের উদ্বেগ প্রকাশ

0

রাঙামাটি : বিলাছড়িতে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার দুই মারমা তরুণীর সাথে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে অবস্থানরত চাকমা সার্কেলের উপদেষ্টা রাণী য়েন য়েন ও ভলান্টিয়ারদের ওপর বর্বরোচিত হামলার উদ্বেগ প্রকাশ করে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নাগরিক সমাজ।

আজ শুক্রবার, বিকাল সাাড়ে ৩টায় রাঙামাটির একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২২ জানুয়ারি বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নের অরাছড়ি গ্রামের দুই মারমা তরুণীর একজনকে ধর্ষণ ও আরেকজনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য দ্বারা এ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে গ্রামবাসীদের সহযোগীতায় ভুক্তভোগী তরুণীরা ২৩ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে ভুক্তভোগীদের পুলিশসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া প্রহরায় হাসপাতালের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। তরুণীদের মানসিক মনোবল ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে  শুরু থেকে রাণী য়েন য়েন ও ভলান্টিয়াররা তাদের সঙ্গ দিয়ে আসছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার সময় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভুক্তভোগী উক্ত দুই তরুণীর সাথে অবস্থানরত রাণী য়েন য়েন ও ভলান্টিয়ারদের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অতর্কিতে বর্বরোচিত হামলা চালায়।  এতে রাণী য়েন য়েন ও কয়েকজন ভলান্টিয়ার আহত হন।  তাদের মধ্যে এক নারী ভলান্টিয়ারকে যৌন হেনস্থাও করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, হাইকোর্টের এক আদেশ মোতাবেক গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইউনিফর্মধারী পুলিশ ও সাদা পোশাকধারী  নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা ভূক্তভোগীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদেরকে বাবা-মা’র হেফাজতে দেওয়ার কথা বলে হাসপাতাল থেকে জোরপূবর্ক তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এ সময় পোশাকধারী ও সাদাপোশাকে বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এদের সাথে আরো সাদা পোশাকধারী ১০ জন নারী ও ৬ জন পুরুষ সদস্য যোগ দেয়। এদের মধ্যে নারীরা ওড়না দিয়ে মুখ ঢাকা ও পুরুষরা মাস্ক পরা অবস্থায় ছিল বলে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নাগরিক সমাজ মনে করে চাকমা সার্কেলের উপদেষ্টা রাণী য়েন য়েন এর ওপর হামলা পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী প্রথাগত প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলার সামিল।

সংবাদ সম্মেলন থেকে হামলার ঘটনায় স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও যথাযথ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি তদন্ত কমিটি দ্রুত গঠন করা; হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচার ও শাস্তি প্রদান করা; ভুক্তভোগী দুই মারমা তরুণীর বর্তমান অবস্থান নিরূপন করে তার একটি সুস্পষ্ট প্রতিবেদন সুপ্রীম কোর্টে প্রেরণ করা; দুই মারমা তরুণীর নিরাপত্তা বিধান করা ও চাকমা রাজ পরিবারসহ সংশ্লিষ্ট সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক গৌতম দেওয়ান, টুকু তালুকদার, এ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান, প্রফেসর মংসানু চৌধুরী, দীপক চাকমা প্রমুখ।
———————-
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্রউল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More