মাটিরাঙ্গায় যুব নেতা পঞ্চসেন ত্রিপুরা হত্যার ১০ম বার্ষিকীতে আলোচনা সভা

0

মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩

যুব নেতা পঞ্চসেন ত্রিপুরাকে হত্যার ১০ম বার্ষিকীতে মাটিরাঙ্গায় আলোচনা সভা করে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম মাটিরাঙ্গাা উপজেলা শাখা।

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম নেতা পঞ্চসেন ত্রিপুরা হত্যার ১০ম বার্ষিকীতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মে ২০২৩) সকাল ১০টায় গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখা এই সভার আয়োজন করে।

“শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না, বরং নতুন বিপ্লবীর বীজ অঙ্কুরিত করে; উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই, ওরে ভয় নাই-নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার,ক্ষয় নাই” এই শ্লোগানে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখার সভাপতি রিকেন চাকমা ও সঞ্চালনা করেন সহ-সাধারণ সম্পাদক অংপ্রু মারমা।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক বিপুল চাকমা, মাটিরাঙ্গা ইউনিটের ইউপিডিএফ সংগঠক সুইমং মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-সভাপতি লিটন চাকমা ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা সাধারণ সম্পাদক রনি ত্রিপুরা প্রমুখ।

সভার পূর্বে ইউপিডিএফ ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নেতৃবৃন্দ এবং শহীদ পরিবারবর্গ অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে পঞ্চসেন ত্রিপুরার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পঞ্চসেন ত্রিপুরাসহ অধিকার আদায়ের আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, পঞ্চসেন ত্রিপুরা ২০১২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের যুব সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব পালনের সময় ২০১৩ সালে ১৮ মে গভীর রাত ২টায় সন্তু লারমার ভাড়াটে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা নিজ বাড়িতে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় তার উপর গুলি চালায়। সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই তিনি শহীদ হন। কিন্তু ১০ বছরেও এ হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা পাইনি।

তারা পঞ্চসেন ত্রিপুরার অবদান স্মরণ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি পূর্ণস্বায়ত্বশাসন আদায়ের আন্দোলনে তিনি এক নিবেদতি প্রাণ কর্মী ছিলেন। তিনি মাটিরাঙ্গা এলাকায় ভূমি বেদখলসহ অন্যায় নিপীড়নের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছেন। যার কারণে শাসকগোষ্ঠি প্রতিক্রিয়াশীল চক্রকে লেলিয়ে দিয়ে নিজ বাড়িতে তাকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।

বক্তারা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ঘাতকরা পঞ্চসেন ত্রিপুরাকে হত্যা করতে পারলেও তিনি যে আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিলেন তা হত্যা করতে পারেনি। তাঁর আত্মবলিদান এবং তাঁর লালিত আদর্শ-চেতনাই যুবসমাজকে আরো বেশি সুদৃঢ়ভাবে সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রেরণা যুগিয়েছে।

তারা বলেন, যারা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যুক্ত হয়ে আত্মবলিদান দেন তারা চিরকাল অমর হয়ে থাকবেন। পঞ্চসেন ত্রিপুরাসহ এ পর্যন্ত যারা শহীদ হয়েছেন ইতিহাসে তাদের নাম চিরভাস্বর হয়ে থাকবে। শহীদ পঞ্চসেন ত্রিপুরার সংগ্রামী চেতনা ধারণ করে তিনি যে আকাঙ্ক্ষা বুকে ধারণ করে সংগ্রামে ব্রত নিয়েছিলেন তা আমাদেরকে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সভার সভাপতি রিকেন চাকমা বলেন, শহীদ পঞ্চসেন ত্রিপুরা আমাদের মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকবেন। তাঁকে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদার করতে হবে। তিনি গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাথে যুক্ত হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার প্রতিষ্ঠানে এগিযে আসার জন্য ছাত্র-যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More