বান্দরবান॥ বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে সেনাবাহিনীর গুলিতে ক্যাসিং অং মারমা নামে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর নিহত হয়েছে। সে রোয়াংছড়ি সরকারী উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র বলে জানা গেছে।
গত ১২ নভেম্বর সোমবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় নিহত ক্যাসিং অং মারমা ও অন্য দুই জন মারমা ছেলে মন্দির থেকে ঘ্যারাও রাস্তার পাশের দোকানে যাচ্ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী এক বৃদ্ধার বর্ণনা অনুসারে, সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি এসে থামে। গাড়ির লাইট নেভানো হয় এবং আর্মিরা গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে ফায়ার করে।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ক্যাসিং অং মারমাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। রাত পৌনে এগারটার দিকে সে মারা যায়।
রোয়াংছড়ি ক্যাম্প থেকে লে. ফারহানের নেতৃত্বে সেনারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তবে সেনারা ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
সন্ত্রাসীদের সাথে সেনাবাহিনীর সদস্যদের গুলি বিনিময়ের সময় সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া গুলিতে ক্যাসিং মারা গেছে বলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রচার চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমেও তাদের বক্তব্যই ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে।
তবে খবর নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার সময় সেখানে সন্ত্রাসীদের কোন উপস্থিতি ছিল না। অন্য সময়ও সেখানে কোন সন্ত্রাসী অবস্থান করে না। কাজেই ‘সন্ত্রাসীদের’ দিক থেকে গুলি চালানোর তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
এদিকে ক্যাসিং অং মারমার লাশ ধর্মীয় ও সামাজিক রীতি অনুযায়ী সৎকার করতে দেয়া হয়নি। গতকাল সেনাবাহিনী এলাকার লোকজনে তার লাশ দাহ করতে না দিয়ে কবর দিতে বাধ্য করে।
নিহতের বাবা হ্লানুমং মারমা ঘটনার পর থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে তাকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের গুলিতে তার ছেলে মারা যায় বলে এজাহারে উল্লেখ করতে বাধ্য করা হয় বলে জানা গেছে।
ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে।
————————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।