ঢাকা : আগামী ২২ – ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ঢাকায় এক ছাত্র-যুব-নারী কনভেনশনের আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সস্টিটিউশনে এ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে। কনভেনশনে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, শ্রমিক ও দেশের বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতিসত্তার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
২২ ফেব্রয়ারি সকাল ১০টায় কনভেনশন উদ্বোধন করবেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর। এতে বিশিষ্ট চিন্তাবিদ আবুল কাশেম ফজলুল হক, চা-জনগোষ্ঠী আদিবাসী ফ্রন্ট এর সভাপতি পরিমল সিং বাড়াইকসহ জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন ছাত্র-যুব-নারী সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখবেন।
এ উপলক্ষে কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি পোস্টার এবং আহ্বানপত্র (হ্যান্ডবিল) প্রকাশ করেছে। পোস্টারের আহ্বান হচ্ছে- “জেগে ওঠো, রুখে দাঁড়াও” এবং শ্লোগান হচ্ছে “চোখের সামনে বোনের সম্ভ্রমহানি, ভাইয়ের হত্যা,বাস্তুভিটা দখল – অরাজকতা,গণশত্রুদের আর বরদাস্ত করব না!“
পাহাড়-সমতলে নারীর সম্ভ্রম, জীবনের নিরাপত্তা, বাস্তুভিটা রক্ষা ও মানুষের মত সম্মান-অধিকার নিয়ে বাঁচার দাবিতে এই কনভেনশন আয়োজন করা হয়েছে বলে পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে।
কনভেনশন উপলক্ষে প্রকাশিত আহ্বানপত্রে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশ আজ দানব রাহুর করাল গ্রাসে পতিত! পাহাড়-সমতলে কোথাও আজ শান্তি নিরাপত্তা নেই। হাসপাতালের মতো স্থানও আজ আর নারী-শিশু-পাহাড়িদের নিকট নিরাপদ নয়। গেল ১৫ ফেব্রুয়ারি চাকমা সার্কেলের রাণী য়েন য়েন রাঙ্গামাটি হাসপাতালে সেনা কর্তৃক শারীরিকভাবে চরম লাঞ্ছিত নিগৃহীত হয়েছেন। তার আগে ২২ জানুয়ারি বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়িতে মারমা দুই বোন সেনা জওয়ানের হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ইতিপূর্বে এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে খুন করে নান্যাচরের সেনা কর্মকর্তারা, তার মরদেহও পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে ফেলে। অন্যায়ভাবে ধরপাকড়, খুন-অপহরণ-গুম, নারী ধর্ষণ শ্লীলতাহানি– পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে বলতে গেলে প্রাত্যাহিক ঘটনায় পরিণত হতে চলেছে।
এতে আরো বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা মোতায়েনের সাথে তথাকথিত ‘অপারেশন উত্তরণ’ আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘১১দফা নির্দেশনা’ জারি থাকায় এ অঞ্চলে মানুষ সবচে’ বেশি দুর্ভোগের শিকার। অস্ত্র গুঁজে দিয়ে গ্রেফতার-সেনা কর্মকর্তাদের প্রমোশন বাণিজ্য, রাতে-বিরাতে হুমকিমূলক টহল, রাস্তাঘাটে তল্লাশির নামে হয়রানির ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক কালে আইএসআই মদদপুষ্ট সেনাবাহিনীর পাকিস্তানপন্থী চক্রটি পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লেলিয়ে দিয়ে হত্যা-অপহরণ-চাঁদাবাজির এক ধ্বংসাত্মক খেলায় মেতে উঠেছে। জনগণ এদের নাম দিয়েছে ‘নব্য মুখোশবাহিনী’। ইতিমধ্যে মুখোশবাহিনীর হাতে ইউপিডিএফ সংগঠন মিঠুনসহ ৪জন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। নিজ বাড়িতে যখন নিরাপত্তা নেই, আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সংস্থার লোকরাই যখন নিরাপত্তার বড় হুমকি, এ পরিস্থিতিতে সচেতন দেশপ্রেমিক কারোর পক্ষে আর হাত গুটিয়ে নিশ্চুপ থাকা সম্ভব নয়।
আহ্বানপত্রে কনভেশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রকৃত নাগরিকের সম্মান-অধিকার ও নিজ নিজ জাতিসত্তার স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।
———————-
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্রউল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।