খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের শ্মশান বেদখল করেছে জামায়াত নেতা সেলিম!

0

সিএইচটিনিউজ.কম
bhumi-bedokolখাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ২নং কমলছড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ভূয়াছড়ির মঙ্গলচান কার্বারী পাড়া এলাকায় (বাঙালিদের দেয়া নাম রাজশাহী টিলা) ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ২০০বছরের পুরনো শ্মশানটি বেদখল করেছে জামায়াত নেতা ও খাগড়াছড়ি মিউনিসিপ্যাল উচ্চ বিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা বিষয়ক সহকারী শিক্ষক মাহবুল হক সেলিম প্রকাশ সেলিম হুজুর। শ্মশানটি উদ্ধারের দাবি জানিয়ে ধর্মমন্ত্রীর বরাবরে পাঠানো এক আবেদনপত্রে এলাকাবাসী এ অভিযোগ করেছেন।

গত ১৮ জুন জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সদর উপজেলার কমলছড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মঙ্গলচান কার্বারী পাড়ার সাবেক ইউপি মেম্বার কমল জয় ত্রিপুরা এ শ্মশানটি পুন:রুদ্ধারে ধর্মমন্ত্রীর বরাবরে সেলিমের ভূমি দস্যুতার বিবরণ দিয়ে অভিযোগ প্রেরণ করেন এবং অভিযোগপত্রের অনুলিপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, স্থানীয় সংসদ সদস্য সহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ভূয়াছড়ি এলাকার প্রায় ৬৫টি পরিবারের একমাত্র শ্মশানটি ২০০৪ সালে জামায়াতে ইসলামী নেতা বর্তমানে খাগড়াছড়ি মিউনিসিপ্যাল উচ্চ বিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা বিষয়ক সহকারী শিক্ষক মাহবুল হক সেলিম ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২.০০ একরের শ্মশানটি বেদখল করে খাস ভূমি বলিয়া স্থানীয় একাধিক বাঙ্গালী পরিবারের নিকট নোটারী পাবলিক এর মাধ্যমে বেচাবিক্রি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রায় ২০০ বছর আগের শ্মশানটিতে বর্তমানে আনুমানিক ০.৫(দশমিক পাঁচ শতক) পরিমাণ যে জায়গাটি অবশিষ্ট রয়েছে সেটিও বেদখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে দখলদাররা। ফলে যে শ্মশানটিতে এলাকার পাহাড়ি সম্প্রদায়ের লোকজন পরলোক গমন করলে দাহ করা হয়, সেই শ্মশানটি আজ বিলুপ্তির পথে। এ বিষয়ে এর আগে স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও দুদকে অভিযোগ করা হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।  এ কারণে পাহাড়িদের মধ্যে ক্ষোভ ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

শ্মশান বেদখলকারী মাহবুল হক সেলিমের বাড়ি পানছড়িতে উল্লেখ করে অভিযোগপত্রে বলা হয়, তৎসময়ে [২০০৪ সালে] সেলিম খাগড়াছড়ি সদরে এসে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে আঁতাত করে উক্ত এলাকায় নামে বেনামে খাস ভূমির ভুয়া কাগজপত্রাদি তৈরি করে সাধারণ বাঙ্গালীদের নিকট বেচাবিক্রি করেন। এছাড়া যে বাঙ্গালীরা এলাকা থেকে চলে গেছেন তাদের পরিত্যক্ত ভূমিও তিনি বেচা-বিক্রি করেছেন। বর্তমানে তার [সেলিম]  কারণে ও শ্মশানের ভূমি বেদখল করায় এলাকায় পাহাড়ি-বাঙ্গালীর মধ্যে দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ পত্রে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

এলাকার ৮৪ জন নারী-পুরুষ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের স্বাক্ষর করা অভিযোগপত্রে, জনস্বার্থে  বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এলাকার ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী শ্মশানটি পুনঃরুদ্ধার ও দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।
————–

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More