হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দীঘিনালা ডিগ্রী কলেজ শাখার ৩য় কাউন্সিল সম্পন্ন
দীঘিনালা : “পূর্ণস্বায়ত্তশাসনই পার্বত্য চট্টগ্রামের একমাত্র রাজনৈতিক সমাধান, পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত ভূমি বেদখল ও অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে জেগে ওঠো জুম্ম নারী” এই শ্লোগানে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দীঘিনালা ডিগ্রী কলেজ শাখার ৩য় কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে। এতে ১১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় বানছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে অনুষ্ঠিত কাউন্সিল অধিবেশনে চৈতালী চাকমার সভাপতিত্বে ও জুঁই চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিনাকী চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিনালা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুকিরণ চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দীঘিনালা থানা শাখার অর্থ সম্পাদক মিঠুন চাকমা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মিষ্টি চাকমা।
অধিবেশন শুরুতে শহীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
কাউন্সিল অধিবেশনে মিনাকী চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী নির্যাতন ও ভূমি বেদখলের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে নারীদেরকে আরো বেশি সোচ্চার হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি বিশেষত মোবাইল ও ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারের ফলে নারীরা বিভিন্নভাবে বিপথে পরিচালিত হচ্ছে। এ বিষয়েও আমাদের আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন বর্তমান সরকার প্রধান নারী হওয়া সত্ত্বেও পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ দেশে নারী নির্যাতন থেমে নেই। প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী নেত্রী অপহৃত কল্পনা চাকমার সন্ধান সরকার আজো দিতে পারেনি। তাই নারীদেরকে নিজেদের রক্ষার জন্যই তৈরি হতে হবে।
তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনে শরীক হওয়ার জন্য নারী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
যুব ফোরাম নেতা সুকিরণ চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, আমরা অধিকারহারা জাতি। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়িদের উচ্ছেদ করতে সরকার পর্যটন, সেনা-বিজিবি ক্যম্প সম্প্রসারণসহ নানাভাবে ভূমি বেদখলের ষড়যন্ত্র করছে। এসবের বিরুদ্ধে নারী-পুরুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
পিসিপি নেতা মিঠুন চাকমা বলেন, আমাদের লড়াইয়ের মূল লক্ষ্য হচ্ছে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করা। এই লড়াইকে সফল করার জন্য আমাদের ছাত্রসমাজ ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে চৈতালী চাকমা বলেন, সরকার ও প্রশাসনের নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে আমাদেরকে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। তিনি লড়াই সংগ্রামে নারীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, চীন, ভিয়েতনাম থেকে শুরু করে বিশ্বে যেখানে বিপ্লব সফল হয়েছে সেখানে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। পার্বত্য চট্টগ্রামেও অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নারী সমাজকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
পরে কাউন্সিল অধিবেশনে উপস্থিত সবার সম্মতিক্রমে মিষ্টি চাকমাকে সভাপতি, সোনাকী চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও সুমিতা চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
—————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।