চঞ্চুমনি চাকমার ওপর হামলা ও নারী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে মানিকছড়িতে বিক্ষোভ

0

মানিকছড়ি(খাগড়াছড়ি) : খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান চঞ্চুমনি চাকমার ওপর হামলা ও কাউখালী-খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি নারী ধর্ষণের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানিকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার (২৩ জুলাই ২০১৮) দুপুরে মানিকছড়ি সদরের ধর্মঘর এলাকায় বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ), হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ) ও নির্বাচিত জুম্ম জনপ্রতিনিধি ব্যানারে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।

# সেনা-পুলিশ মিছিলে বাধা প্রদান করছে।

প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ বিক্ষোভে অংশ নেন।

প্রতিবাদ সমাবেশের আগে দুপুর ১২টায় ধর্মঘর এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি গিরিমৈত্রী ডিগ্রী কলেজ গেইটের সামনে পৌঁছলে সেনা-পুলিশ বাধা প্রদান করে। পরে মিছিলটি পূনরায় ধর্মঘর এলাকায় গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ১নং লক্ষ্মীছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রবীল চাকমা, ২নং দুল্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ত্রিলন চাকমা, পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তপন চাকমা, ডিওয়াইএফ’র জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রুপেশ চাকমা। এসময় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক অবনিকা চাকমা, লক্ষীছড়ি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বেবী রানী বসু ও ৩ নং বর্মাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান হরি মোহন চাকমা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশ পরিচালনা করেন, পিসিপি মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক ডেবিট চাকমা।

# সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন লক্ষ্মীছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান প্রবীল চাকমা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ে দেশের জনগণ কেউ নিরাপদ নয়। জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ যারা সরকার শাসকগোষ্ঠীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে, তাদের অনৈতিক কর্মকা-ের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদেরকে খুন-গুম-অপহরণ, মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আটক ও নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়নের অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে জনপ্রতিনিধির ওপর হামলা, আন্দোলনে যুক্ত রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের খুন, অপহরণ করা হচ্ছে। সমানতালে চলছে পাহাড়ি নারী ধর্ষণ-নির্যাতনের মতো বর্বর ঘটনা। কিছুদিন আগে রাঙামাটির কাউখালীতে দুই সন্তানের জননী এক মারমা নারী ও খাগড়াছড়িতে এক স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

তারা আরো বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট সরকার তার পেটুয়া বাহিনীকে ব্যবহার করে জনগণের প্রতিবাদী কন্ঠকে রুদ্ধ করে রাখতে নানা ষড়যন্ত্র চলাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করে গণতান্ত্রিক মিছিল মিটিংয়ে সেনা-পুলিশ বাধা দিচ্ছে। আজকে শান্তিপূর্ণ মিছিলে বাধাদানের ঘটনায় বক্তারা নিন্দা জানান।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে সরকার পাহাড়িদের বাড়ি-ঘরে তল্লাশি, হয়রানি, লুটপাট চালাচ্ছে। নিজেদের কায়েমী স্বার্থ হাসিলের জন্য সেনাবাহিনীর একটি অংশ পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি জিইয়ে রাখতে পাহাড়িদের মধ্যেকার দালাল-প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে সংঘাতকে উস্কে দিচ্ছে।

বক্তারা বলেন, গত ১৩ জুলাই প্রকাশ্যে দিবালোকে প্রশাসনের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে প্রেসক্লাবের সামনে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান চঞ্চুমনি চাকমার ওপর হামলার ঘটনা ঘটলেও হামলাকারী ও তাদের মদদদাতাদের পুলিশ এখনো গ্রেফতার করেনি। অথচ হামলার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীরাই পুলিশের নাকের ডগায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে চঞ্চুমনি চাকমার উপর হামলাকারীদের গ্রেফতার, কাউখালী ও খাগড়াছড়িতে নারী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী নির্যাতন-ধর্ষণ-খুন-গুম-অপহরণ বন্ধ, সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা বাতিল ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
————————-
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More