দীঘিনালায় শহীদ অনিমেষ চাকমার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ধর্মীয় সভা অনুষ্ঠিত

0

সিএইচটিনিউজ.কম

শহীদ অনিমেষ চাকমা
শহীদ অনিমেষ চাকমা

দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) : ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ অনিমেষ চাকমার ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া রাস্তা মাথায় শহীদের নিজ বাড়িতে আজ ২৩ মে শুক্রবার সকালে এক ধর্মীয় সভার আয়োজন করা হয়েছে। শহীদ অনিমেষ চাকমার পরিবার এই ধর্মীয় সভার আয়োজন করে। ধর্মীয় সভায় ভিক্ষুসংঘের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাবুছড়া সাধানাটিলা বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত বুদ্ধবংশ থেরো, শান্তিনিবাস বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ জ্ঞানরত্ন ভিক্ষু।

ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শহীদ অনিমেষ চাকমার পারলৌকিক সদগতি কামনা করে ভিক্ষুগণ পঞ্চশীল প্রার্থনা, বুদ্ধমুর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, হাজার বাতিদান, কল্পতরু দান সূত্র দেশনা প্রদান করেন। এছাড়া সকল সত্ত্বগণের মুক্তি প্রার্থনায় পানিঢালা সূত্র পাঠ করা হয়।

ধর্মীয় সভা অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় প্রারম্ভিক বক্তব্যে জীতেন্দ্রীয় চাকমা বলেন, শহীদ অনিমেষ চাকমা জাতিসত্তার অধিকারের জন্য জীবনদান করেছেন। তার সম্মানার্থে বাবুছড়া রাস্তার মাথা এলাকার রাস্তার পাশে তার একটি ভাস্কর্য স্থাপন করার আকাঙ্খা ব্যক্ত করেন এবং এ জন্য শহীদ অনিমেষ চাকমার শুভাকাঙ্খী সকলের প্রতি তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে অনুরোধ জানান।

শহীদ অনিমেষ চাকমার কাকা ইন্দু বিকাশ চাকমা বলেন, শহীদ অনিমেষ চাকমার স্মরণে আয়োজিত এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কথা বলতে গিয়ে আজ আমি বাকরুদ্ধ। তিনি বলেন শহীদ অনিমেষ চাকমা ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে বলি হয়েছেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত মানবিক ও কর্তব্যপরায়ন একজন ব্যক্তি। এ সময় তিনি তিন রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতি ভ্রাতৃঘাতি হানাহানি বন্ধ করতে অনুররোধ জানান। ভ্রাতৃঘাতি হানাহানির কারণে আজ সাধারণ জনগণ খুব কষ্টে আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ধর্মদেশনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ধর্মদেশনায় বাবুছড়া সাধনাটিলা বিহারের বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত বুদ্ধবংশ থেরো বলেন, শ্রদ্ধেয় বনভান্তে বলেছিলেন দু:খই মুল জ্ঞানদাতা শিক্ষক। দু:খলাভের মাধ্যমে শিক্ষালাভের সুযোগ লাভ করা যায়। আমাদের দু:খ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, পালি ধর্মীয় সূত্রে লেখা রয়েছে, সংঘ বা একতাই সুখ বা শান্তির মূল। চারি পারিষদ যেমন, ভিক্ষু সংঘ, ভিক্ষুনী সংঘ, উপাসক সংঘ, উপাসিকা সংঘ এই চার পারিষদ একজোট হলেই সুখ শান্তির সৃষ্টি হয়। শহীদ অনিমেষ চাকমা প্রসঙ্গে তিনি ধর্মের বাণী টেনে বলেন কর্মই বন্ধু কর্মই হলো সকল কিছুর কারণ।

ধর্মীয় সভা শেষে উপস্থিত পূণ্যার্থীগণকে দুপুরের খাবার পরিবেশন করা হয়।

উল্লেখ্য, শহীদ অনিমেষ চাকমা ২০১১ সালের ২১ মে রাঙামাটির শুভলঙে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনের সময় নিহত হন। তার সাথে আরো নিহত হন পূর্ণ ভুষণ চাকমা, শুক্রসেন চাকমা ও পুলক চাকমা।
——————–

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More