মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের দাবিতে লক্ষ্মীছড়িতে ইউপিডিএফের বিক্ষোভ মিছিল
লক্ষ্মীছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৩

পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট ঠ্যাঙারে বাহিনীর সন্ত্রাসসহ মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের দাবিতে খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) লক্ষ্মীছড়ি ইউনিট।
আজ রবিবার (১৫ জানুয়ারি ২০২৩) বিক্ষোভ মিছিল শেষে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইউপিডিএফ সংগঠক বিবেক চাকমার সভাপতিত্বে ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের লক্ষ্মীছড়ি থানা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শুভ চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক রুপান্ত চাকমা, লক্ষ্মীছড়ি থানা শাখার সভাপতি রিটন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা সভাপতি পাইচি মারমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের লক্ষ্মীছড়ি থানা শাখার সভাপতি সুপ্রভা চাকমা।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের শাসকোগোষ্ঠি পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়িদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য যুগ যুগ ধরে সেনাশাসন জারি রেখে দমন-পীড়ন, গণহত্যা, ভূমি বেদখল, উচ্ছেদ, নারী নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। পার্বত্য চুক্তির পরও এই নিপীড়নের না কমে বরং আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে জনগণের মুক্তিকামী দল ইউপিডিএফের ওপর চালানো হচ্ছে অবর্ণনীয় নিপীড়ন। নেতা-কর্মীদের বিচার বহির্ভুত হত্যা, অন্যায় গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি রাখা, ঠ্যাঙারে বাহিনীর সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে খুন, গুম,অপহরণ করা হচ্ছে।

বক্তারা আরো বলেন, সরকার ও তার বাহিনী শুধু দমন-পীড়ন, খুন, গুম করে থেমে নেই। তারা পাহাড়িদের উচ্ছেদ করতে জোরদার করেছে ভূমি বেদখল কার্যক্রম। গত বছর ৫ জুলাই মহালছড়ির জয়সেন পাড়ায় সেটলার বাঙালি লেলিয়ে দিয়ে পাহাড়িদের ৩৭টি ঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, লুটপাট, রাবার কোম্পানি কর্তৃক বান্দরবানে লামায় ম্রো ও ত্রিপুরাদের উচ্ছেদ করতে তাদের ভোগদখলীয় ৪০০ একর জুমভূমি বেদখলের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে গত ১ জানুয়ারি দিবাগত গভীর রাতে রেংয়েন ম্রো পাড়ায় ম্রোদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বলতে হয় থানায় মামলা হওয়ার পরও প্রশাসন এ ঘটনায় জড়িতদের এখনো আইনের আওতায় আনেনি। শুধু তাই নয়, সমানতালে নারী ধর্ষণ-নির্যাতনের ঘটনাও সংঘটিত করা হচ্ছে। গত বছর ১৬ জন নারী-শিশু যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন, গত ৫ জানুয়ারি বান্দরবানে এক তঞ্চঙ্গ্যা নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ১৯৯৬ সালে নারী নেত্রী কল্পনা চাকমাকে অপহরণের সাথে সেনা কমাণ্ডার লে. ফেরদৌস ও তার দোসরদের গ্রেফতার ও বিচার না হওয়ায় নারী নির্যাতনের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত সকল গণহত্যাসহ বিচার বহির্ভুত হত্যা, খুন, গুম, অপহরণ, নারী নির্যাতন, ভূমি বেদখলের ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ বিচার এবং এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকার ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন