দীঘিনালায় শহীদ মিঠুন চাকমার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণসভা

0

দীঘিনালা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারি ২০২৩

শহীদ মিঠুন চাকমার স্মরণসভা

“ঘাতকদের রেহাই নেই, জনতার আাদালতে বিচার হবেই” এই শ্লোগানে এবং ‘বিপ্লবী চেতনায় আন্দোলনে যুক্ত হোন, অন্যায়ের প্রতিবাদে সামিল হোন” এই আহ্বানে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ইউপিডিএফ সংগঠক শহীদ মিঠুন চাকমার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।

এ উপলক্ষে আজ ৩ জানুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর দীঘিনালা ইউনিটের উদ্যোগে এক স্মরণসভায় আয়োজন করা হয়।

ইউপিডিএফের দীঘিনালা ইউনিটের সমন্বয়ক মিল্টন চাকমার সভাপতিত্বে ও সুকিরণ চাকমার সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ সংগঠক সুজয় চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিনালা উপজেলা সভাপতি জ্ঞান প্রসাদ চাকমা, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক পূর্ণ জ্যোতি চাকমা, বিশিষ্ট মুরুব্বী ইন্দ্র কুমার চাকমা ও যুব নেতা রতন প্রিয় চাকমা। সভার শুরুতে শহীদ মিঠুন চাকমার স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

শহীদ মিঠুন চাকমার প্রতি দাঁড়িয়ে সম্মান জানানো হচ্ছে

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পূর্ণ জ্যোতি চাকমা বলেন, শুনেছি মিঠুন চাকমা অত্যন্ত মেধাবি ছিলেন। এম এ পাস করে সরকারি চাকরি না করে পার্টির সাথে যুক্ত হয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করে প্রমান করেছেন সমাজ ও জনগণের প্রতি তাঁর ভালবাসা। বর্তমান ছাত্র ও যুব সমাজকে সেখান থেকেই শিক্ষা নিতে হবে, অনুপ্রাণিত হতে হবে।

বিশিষ্ট মুরুব্বী ইন্দ্র কুমার চাকমা বলেন, জীবন বাজী রেখে ইউপিডিএফ কর্মীরা আমাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের কর্তব্য তাদের পাশে থেকে সবসময় সহযোগিতা করা। বাবুছড়ায় সেনাবাহিনী কর্তৃক ঘরবাড়ী নির্মাণ করতে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে যে সমাবেশ করা হয়েছে তার সুফল আজ জনগণ ভোগ করছে। জনগণের পাশে থাকাই একটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব, যা আমরা ইউপিডিএফ থেকে পাচ্ছি।

যুব নেতা রতন প্রিয় চাকমা বলেন, ইউপিডিএফ হচ্ছে জনগণের দল। দীঘিনালায় জায়গা বেদখলের বিরুদ্ধে আমরা এই দলকেই পেয়েছি। হত্যা, জেলে দিয়ে এই দলকে প্রতিহত করা সম্ভব নয়। মিঠুন চাকমাকে হত্য করেও যেমন রোধ করা যায়নি, ভবিষ্যতেও যাবে না।

যুব ফোরাম নেতা জ্ঞান প্রসাদ চাকমা বলেন, শহীদ মিঠুন চাকমা যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক থাকাকালে সংগঠনকে যেভাবে সংগঠিত করেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই ভয়েই শাসকগোষ্ঠী মুখোশ বাহিনী দিয়ে তাকে হত্যা করেছে। কিন্তু তার চেতনাকে হত্যা করতে পারেনি।

সুজয় চাকমা বলেন, সরকার সেনাবাহিনী মনে করেছিল মিঠুন চাকমাকে হত্যা করে ইউপিডিএফ কর্মীদের মনে ভয় পাইয়ে দিয়ে জনগণের দাবীকে স্তব্ধ করে দিতে। কিন্তু এক মিঠুনকে হত্যা করে আজ শত শত মিঠুন পার্টির পতাকাতলে সমবেত হয়েছে। মিঠুন চির অম্লান। আমরা তার চেতনাকে ধারণ করে পূর্ণস্বায়ত্বশাসন আদায় করবোই।

সভার সভাপতি মিল্টন চাকমা বলেন, মিঠুন চাকমার হত্যাকাণ্ড ছিল সরকার ও সেনাবাহিনীর পরিকল্পিত। সে কারণে ঘাতকরা প্রশাসনের আশে-পাশে থাকলেও আজও গ্রেফতার হয়নি।

স্মরণসভায় বক্তব্য রাখছেন ইউপিডিএফ সংগঠক মিল্টন চাকমা

তিনি আরো বলেন, বান্দরবানের লামায় গতকাল রাবার কোম্পানির দুর্বৃত্তরা ম্রোদের ৩টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ৬টি বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে সাজেকে সাজেক কার্বারী এসোসিয়েশনের সভাপতি নতুন জয় কার্বারীকে বিনা অপরাধে সেনাবাহিনী আটক করেছে। সরকার-সেনাবাহিনী হত্যা করে, আটক করে জনগণের দাবিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু জুম্ম জনগণ  ইউপিডিএফের নেতৃত্বে সকল বাধা অতিক্রম করে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আদায় করবেই।

তিনি বলেন, শহীদ মিঠুন চাকমা তার ব্যাক্তিগত স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে যেভাবে পার্টির আদর্শকে ধারণ করে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন আমাদেরকে তার কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা মিঠুনের চেতনাকে হারিয়ে যেতে দেবো না।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More