গুইমারায় সেনা অভিযানে আতঙ্কগ্রস্ত এলাকার জনগণ ও শিক্ষার্থীরা
সিএইচটিনিউজ.কম
গুইমারা (খাগড়াছড়ি) : খাগড়াছড়ির গুইমারায় সেনাবাহিনীর অভিযানের কারণে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে এলাকার জনগণ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। একটি সাইবোর্ড হারানোকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনী এলাকায় রাতে-বিরাতে হয়রানিমূলক বাড়ি তল্লাশি ও ধরপাকড় অভিযান চালাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
জানা যায়, গত ১১ মার্চ সকালে সেনাবাহিনীর গুইমারা রিজিয়ন গুইমারা সদরের বাজার স্কুল মার্কেটের সামনে একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়। যাতে লেখা ছিল “সেনানিবাস এলাকার ২০০ গজ সামনে মিছিল মাইকিং এবং সর্বপ্রকার জনসভা সম্পূর্ণ নিষেধ।” উক্ত সাইনবোর্ডটি গত ২২ মার্চ রাতে কে বা কারা তুলে নিয়ে যায়। সেই সাইনবোর্ডটি উদ্ধারের নামে সেনারা গুইমারা সদরের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি ও ধরপাকড় অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
শুক্রবার (২৭ মার্চ) রাত ৮টায় রামেসু বাজার এলাকায় উহ্লা প্রু মারমার(৪৫) বাড়ি ও একই দিন রাত ১২টায় নতুন পাড়ার বাসিন্দা মংবাই মারমার (৫০) বাড়ি তল্লাশি চালানো হয়।
এ সময় সেনারা উহ্লা প্রু মারমার ছেলে গুইমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ৮ম শ্রেণীর ছাত্র বাবুশ্যে মারমা ও মংবাই মারমার ছেলে একই বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র ক্যজাই মারমাকে খোঁজ করে।
এর আগে ২৬ মার্চ গভীর রাতে সন্ত্রাসী ও সাইনবোর্ড খোঁজার নামে সেনারা গুইমারা সদরের দার্জিলিং টিলায় ছাত্রদের একটি ভাড়া বাসায় গিয়ে তালা ও দরজা ভেঙ্গে রুমে ঢুকতে চেষ্টা চালায়। কিন্তু সেখানে ঢুকতে না পেরে ক্যাম্পে ফিরে যাওয়ার সময় সেনা সদস্যরা ঐ এলাকার রাস্তা থেকে ছাত্রলীগের উপজেলা সভাপতি সাগর ও গুইমারা ইউনিয়ন পরিষদে সেক্রেটারি সম্রাট সহ কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যায় ও পরের দিন ছেড়ে দেয়।
তারও আগে গত ২৩ মার্চ সকাল থেকে সেনা সদস্যরা গুইমারা বাজারের বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ডটি খোঁজাখুজি করে না পেয়ে গুইমারা সদরের সড়ক ও জনপথ বিভাগ এলাকা থেকে রামগড় সরকারী কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থী লিঙ্কন বড়ুয়াকে (১৮) মারধর করে গুইমারা রিজিয়নে নিয়ে গিয়ে সাইনবোর্ডটি বের করে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করার পর তার কাছ থেকে কোন কিছু জানতে না পেরে “যত দিন সাইনবোর্ডটি উদ্ধার হবে না ততদিন প্রতিদিন বিকাল ৪টায় গুইমারা রিজিয়নে গিয়ে হাজিরা দিতে হবে” মর্মে তাকে শর্ত দেওয়া হয়। উক্ত শর্ত মেনে নিলে ওইদিন রাত ৮.৩০টায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় ।
সাইনবোর্ডটি এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি বলে জানা গেছে। এদিকে, সেনাবাহিনীর এ ধরনের হয়রানিমুলক অভিযানের কারণে এলাকার স্কুল-কলেজে পড়য়া শিক্ষার্থী ও জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
——————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।