চট্টগ্রাম : শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত অগণতান্ত্রিক সার্কুলার প্রত্যাহারসহ কেন্দ্রীয় ঘোষিত ৮ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে চট্টগ্রাম নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
আজ শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় নগরীর শহীদ মিনার প্রাঙ্গন থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে প্রেসক্লাব ঘুরে চেরাগী পাহাড় মোড়ে এসে এক সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
পিসিপির নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক জিকো চাকমার সভাপতিত্বে মিছিল পরবর্তী অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক রুপন চাকমা। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সংগঠক সামিউল আলম। সভা সঞ্চালনা করেন ছাত্র নেতা অংকন চাকমা। বক্তব্য চলাকালে পুলিশ মাইক্রোফোন কেড়ে নিলে মাইক্ ছাড়াই সমাবেশ শেষ করা হয়।
সমাবেশে রুপন চাকমা অভিযোগ করে বলেন, ১৭ই আগষ্ট রাঙামাটির নান্যচর উপজেলায় নানিয়াচর কলেজে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নবীন বরণ ও কাউন্সিলে ‘‘পূর্ণস্বায়ত্তশাসনই পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার একমাত্র সমাধান’’ – শ্লোগানটি ব্যবহার করায় এই শ্লোগানকে পরিকল্পিতভাবে বিকৃত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি কলেজ শাখা-৬ এর সিনিয়র সহকারী সচিব নাসিমা খানম স্বাক্ষরিতে এক বিতর্কিত সার্কুলারে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়। যা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও চরম অগণতান্ত্রিক।
পার্বত্য তিন জেলা পরিষদগুলো সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের পূনর্বাসন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অনির্বাচিত চেয়ারম্যানসহ ১৫ সদস্যের দলীয় মনোনীত পরিষদ পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো পরিচালনা করছে। ১৯৮৯ সালে নামে মাত্র একবার নির্বাচন হলেও দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাচন না হওয়ায় সরকার দলীয় মনোনীত ব্যক্তিরা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য ঘুষ নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি অবিলম্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত অবৈধ সার্কুলার প্রত্যাহার, শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করা ও পিসিপি’র উত্থাপিত ৮ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান।
পিসিপির ৮ দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে সামিউল আলম বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অগণতান্ত্রিক ১১ দফা নির্দেশনা প্রত্যাহার করে পাহাড়ে সভা-সমাবেশের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জিকো চাকমা বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন সরকার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সাথে হাত মিলিয়ে পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সাম্প্রদায়িক বক্তব্য সংযোজন করেছে। তিনি অবিলম্বে পাঠ্যপুস্তক থেকে সাম্প্রদায়িক বক্তব্য বাদ দেয়াসহ প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।
—————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।