লামায় ম্রো ও ত্রিপুরাদের ৪০০ একর ভূমি ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে চট্টগ্রামে নাগরিক সমাবেশ

0
43

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ ।। বান্দরবানের লামায় ম্রো ও ত্রিপুরা জাতিসত্তাদের ৪০০ একর ভূমি অবিলম্বে ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে এবং লামা রাবার ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড এর চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেনসহ মুল হোতাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে এবং জেলা প্রশাসক কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির ষড়যন্ত্রমুলক ও পক্ষপাতদুষ্ট তথাকথিত শুনানির প্রতিবাদে চট্টগ্রামে নাগরিক সমাবেশ করেছে চট্টগ্রামস্থ সচেতন নাগরিক সমাজ।

আজ শুক্রবার (২৭ মে ২০২২) বিকাল সাড়ে ৩ টায় চট্টগ্রাম নগরের ডিসি হিল হতে মিছিল শুরু হয়ে প্রেস ক্লাব প্রদক্ষিণ করে চেরাগি পাহাড় মোড়ে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে লামায় ক্ষতিগ্রস্ত ম্রো ও ত্রিপুরা জাতিসত্তার লোকজনও অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশে চট্টগ্রামস্থ সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক এড. ভূলন ভৌমিকের সভাপতিত্বে ও অংকন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন নিপীড়ন বিরোধী আইনজীবী মঞ্চের যুগ্ম সম্পাদক এড. বিষুময় দে, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সোহেল চাকমা প্রমূখ।

সমাবেশে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ভিকটিম লাংকম ম্রো, জয়চন্দ্র ত্রিপুরা, বেলুয়া ম্রো, সংলে ম্রো এবং রঙ্গজন ত্রিপুরা।

সমাবেশে ডা. মাহফুজুর রহমান সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামের বন প্রকৃতিকে ধ্বংস এবং পাহাড়ি জাতিসত্তাদের উচ্ছেদ করে তথাকথিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কখনই বাঙালি ভিন্ন অন্য জাতিসত্তাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদ চাপিয়ে দেয়া নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যাঁরা ধারণ করেন না, তারাই দেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় অবদান রাখা দেশের বীর সৈনিকদের আত্মত্যাগকে অস্বীকার করে।

রঙ্গজন ত্রিপুরা বলেন, আমরা আমাদের জীবন দেবো, তবু আমাদের ৪শ একর ভূমি কেড়ে নিতে দেবো না। জেলা প্রশাসন হতে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির লোকেরা যে ভূমি লীজ নিয়েছেন তার কোন বৈধতা নেই। সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আমাদের উপর অন্যায় করা হচ্ছে। লীজের কাগজপত্রেরও কোন আইনগত বৈধ্যতা নেই বলে তিনি অভিযোগ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে এডভোকেট ভূলন ভৌমিক বলেন, পাহাড়ের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে দমানোর জনই সরকার প্রশাসন বাহিনী চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন তকমা লাগিয়ে দিয়ে দমন করে যাচ্ছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভুলে গেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যদি স্বায়ত্তশাসন দিয়ে দিতো তাহলে আজকে এই দেশ স্বাধীন দেশ হতো না। সুতরাং পার্বত্য চট্টগ্রামকে সাংবিধানিকভাবে স্বায়ত্তশাসন না দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরী করবেন না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চাঁদাবাজ এবং সন্ত্রাসী হচ্ছে সরকারের নেতাকর্মী পুলিশ প্রশাসনের লোকজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধী মতের উপর হামলার সময় আমরা দেখেছি ছাত্রলীগের কর্মীরা কিভাবে পুলিশের সামনে রাইফেলের গুলি চালিয়েছে।

তিনি লামার ম্রো এবং ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সেই ৪০০ একর ভূমি আপনাদের দয়া ভিক্ষার নয়, আপনাদের অধিকার। আপনাদেরকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সেই ভুমি কেড়ে নিতে হবে।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.