মিরসরাইয়ে ত্রিপুরা গ্রামে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে পার্বত্য তিন সংগঠন ও ইউপিডিএফ
চট্টগ্রাম: মিরসরাই উপজেলার উত্তর তালবাড়িয়ায় ত্রিপুরা গ্রামে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ ও তিন সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন। এসব সংগঠনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সামগ্রী ও আর্থিক সহযোগীতা প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় ইউপিডিএফ-এর চট্টগ্রাম ইউনিটের সংগঠক ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি অংগ্য মারমার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর ১৬ সদদ্যের একটি টিম মিরসরাই উপজেলার উত্তর তালবাড়িয়ায় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ১১ পরিবারকে সমবেদনা জানাতে ও ত্রাণ সহযোগিতা নিয়ে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের গ্রামে যায়। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গ ও গ্রামের সকলে প্রতিনিধি দলকে সাদরে অভ্যর্থনা জানান।
প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের চট্টগ্রাম মহানগরের সহ-সভাপতি শুভ চাক্ সাংগঠনিক সম্পাদক সুকৃতি চাকমা, অর্থ সম্পাদক শ্যামল চাকমা, বন্দর থানার সহ-সাধারণ সম্পাদক রাসেল চাকমা, সদস্য রুদ্র চাকমা, জনি চাকমা, চান্দঁগা থানার সহ-সাধারণ সম্পাদক পরেশ ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক জিকো চাকমা, সদস্য মেকলিন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক রিতা চাকমা ও সদস্য সচিব জুলেখা চাকমা। এছাড়া প্রতিনিধি দলে ছিলেন শুভাকাক্ষী সমীরণ চাকমা ও সুমেধ চাকমা।
এ সময় গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অংগ্য মারমা বলেন, ‘সরকার বা রাষ্ট্র যদি পাহাড় ও সমতলের সংখ্যালঘূ জাতি ও জনগণের বান্ধব সরকার হতো তাহলে অগ্নিকান্ডের তিন দিন পর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের এই অবস্থায় পড়ে থাকতে হতো না’
তিনি তার আলোচনায় আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ও তার প্রশাসন সংখ্যালঘুদের জন্য আন্তরিক মনোভাব দেখালেও বাস্তবতা হলো এই অগ্নিকান্ডের ঘটনার কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন চোখে পাট্টি বেঁধে বসে আছে।
স্থানীয়দের পক্ষ থেকে এতে বক্তব্য রাখেন সুরেন্দ্র ত্রিপুরা (সুরেশ)।
তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দায়সারা ভাব নিয়ে পুলিশি তদন্ত করা ছাড়া তেমন কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি। এছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার প্রতি ১,০০০/- (এক হাজার টাকা) করে সাহায্যা প্রদান করেছে, যা ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতির তুলনায় অপ্রতুল বলে নেতৃবৃন্দ মনে করেন।
পরে তিন সংগঠনের পক্ষ থেকে সংগৃহীত চাউল, টাকা ও কাপড়-চোপড় ‘ত্রাণ সংগ্রহ, বন্টন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির’ আহ্বায়ক শান্তি রাম ত্রিপুরা, সদস্য সচিব নন্দ ত্রিপুরা ও সদস্যদের হাতে তুলে দেন। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজনৈতিক সংগঠন ইউপিডিএফ এর পক্ষ থেকে প্রতি পরিবারকে ৩,০০০/-(তিন হাজার) টাকা করে সহযোগীতা প্রদান করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি অংগ্য মারমা এবং ত্রাণ সংগ্রহ, বন্টন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক শান্তি রাম ত্রিপুরা ও সদস্য সচিব নন্দ ত্রিপুরা।
অগ্নিকান্ডের ঘটনায় উত্তর তালবাড়িয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ২য় শ্রেণীর ছাত্র রূপন, রতন, ঝিনুক মালা ত্রিপুরা ও তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র ফুল মালা এবং মিলন মালা ত্রিপুরার বই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তারা এখানো স্কুলের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বই পায়নি বলে প্রতিনিধি দলের কাছে অভিযোগ করেন।
প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।
—————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।