রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ৯ বছর, এখনো ঝুলিয়ে রয়েছে বিচার প্রক্রিয়া

0

নিজস্ব প্রতিবেদক ।। আজ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর ভয়াল সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার ৯ বছর পূর্ণ হলো। ২০১২ সালের এ দিন রাতে ভয়াল এ হামলার ঘটনাটি ঘটেছিল। ‘কোরান অবমাননার’ গুজব ছড়িয়ে সেদিন রামুর ঐতিহ্যবাহী ১২টি বৌদ্ধ বিহার ও বৌদ্ধ পল্লীতে এক যোগে অগ্নিসংযোগ ও হামলা চালানো হয়েছিল।

পরের দিন একই ঘটনার জের ধরে উখিয়া এবং টেকনাফেও আরো ৭টি বৌদ্ধ বিহার পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু দীর্ঘ ৯ বছর আগে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হামলার এমন ঘটনাটির এ যাবৎ কোনো কুল কিনারা হয়নি। এখনো নিষ্পত্তি হয়নি ১৮টি মামলার। এসব মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার। তন্মধ্যে অভিযোগপত্রসমূহে আসামির সংখ্যা ৯৮৪ জন।

পরে পুলিশ ব্যুারো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কয়েকটি মামলা পুনঃতদন্ত করে আরো ৩৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। মোট মামলার সংখ্যা ১৯টি। এর মধ্যে রামু থানায় দায়ের করা কেবল একটির আপস সূত্রে বিচার কাজ শেষ হওয়ায় মামলাটির চার্জশিটভুক্ত ৩৮ জন আসামির সবাই খালাস পেয়ে যান। বাদ বাকী ১৮টি মামলা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। মামলায় কোনো আসামি বর্তমানে কারাগারে নেই।

এদিকে ৯ বছরেও মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় হতাশ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন। মামলার চার্জশিট দাখিল নিয়ে রয়েছে চরম অসন্তোষ। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সাধারণ জনগণ বলছেন, এ ঘটনায় জড়িত হিসেবে চিহ্নিত অনেক মানুষ মামলার আসামি নন। অপরাধীদের বেশিরভাগ আইনের আওতায় না আসায় তাদের শঙ্কাও কাটছে না।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের রামু উপজেলা সদরের চেরাংঘাটা গ্রামের সুদত্ত বড়ুয়ার পুত্র উত্তম কুমার বড়ুয়া (২৮) নামের এক যুবকের ফেসবুকের একটি কথিত ছবি নিয়ে গুজব রটিয়ে ঘটনো হয়েছিল দেশের কলঙ্কিত এতবড় ঘটনাটি। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা রাতে রামুর ফকিরা বাজারের ফারুক কম্পিউটার টেলিকমের মালিক ফারুক এবং স্থানীয় শিবিরকর্মী মুক্তাদির বসে উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুক থেকে পবিত্র কোরআন অবমাননার একটি ছবি বের করে। সেই ছবির কথা মুহূর্তেই চাউর হয়ে পড়ে চারিদিকে। 

আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ মিছিল বের হয় এবং পরবর্তীতে রামু বৌদ্ধ পল্লীতে হামলা ও অগ্নিসংযোগে একে একে ৩২টি বসতঘর এবং ১২টি বৌদ্ধ মন্দির ও বিহার পুড়ে মুহূর্তেই ছারখার হয়ে যায়।

একই ঘটনার জের ধরে পরেরদিন উখিয়া-টেকনাফে আরো ৭টি বৌদ্ধ বিহার ও মন্দির পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং কয়েকটি বসতঘর ভাঙচুর করা হয়।

কিন্তু ঘটনার পর থেকে আজ পর্যন্ত উত্তম বড়ুয়া নামের সেই ব্যক্তিকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। অপরদিকে গুজব রটনার মূল হোতা মুক্তাদির গ্রেফতার হলেও পরে সে জামিন লাভ করে কারাগার থেকে মুক্তি পায়।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More