আর্মিরা মিথ্যা বলেছে : ভদন্ত ইন্দাচারা ভিক্ষু

0

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সেনা হেফাজতে নির্যাতনের ফলে মারা যাওয়া ছাত্রনেতা রমেল চাকমার লাশ পোড়ানোর সময় ধর্মীয় মন্ত্র পাঠ করতে সেনারা মহালছড়ি থেকে এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে ভুল বুঝিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তার নাম নাইন্দাগা ভিক্ষু, থাকেন আর্যমিত্র কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারে। এ বছর তিনি মহালছড়ি পাইলট স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত ইন্দাচারা ভিক্ষুর আদেশে তিনি সেনাদের সাথে গিয়েছিলেন।

# রমেল চাকমার  লাশ

সিএইচটি নিউজ ডটকমের পক্ষ থেকে বিহারধ্যক্ষ ইন্দাচারা ভিক্ষুর সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ৯ টার দিকে স্থানীয় জোন থেকে কয়েকজন আর্মি বিহারে আসে। তারা আমাকে বলে যে তাদের একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু দরকার। আমি কেন প্রশ্ন করলে তারা জানায় যে, একজন অনাথ মারমা ছেলে মারা গেছে, তার সৎকার করতে হবে। এজন্য সূত্র পাঠ করতে হবে। আমি সরল মনে তাদের বিশ্বাস করে নাইন্দাগা ভিক্ষুকে পাঠাই।’

ইন্দাচারা ভিক্ষু বলেন, ‘পরে বুঝতে পেরেছি, আর্মিরা মিথ্যা বলেছে। আমি মনে করেছিলাম আশেপাশে কোথাও ছেলেটা মারা গেছে। প্রকৃত ঘটনা জানতে পারলে কোন ভিক্ষুকে পাঠাতাম না।’

নাইন্দাগা ভিক্ষু জানান লাশটি পোড়ানোর সময় উপস্থিত থাকলেও তিনি কোন সূত্র পাঠ করেননি।

# কিছু লাকড়ি আর পেট্রোল ঢেলে এভাবে রমেল চাকমার লাশটি পুড়িয়ে ফেলে আর্মিরা

তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাটা আগে জানতাম না। বড় ভান্তে বলেছেন যেতে তাই গেছি। তারা আমাকে প্রথমে পূর্ব হেডমরায়(হাতিমারা) নিয়ে যায়। মহালছড়ির বাইরে। অর্ধেক পথে আমার সন্দেহ হয়, নিশ্চয়ই তাদের অন্য কোন মতলব আছে। শেষ পর্যন্ত গিয়ে দেখি একটা লাশ। এলাকাটা আমার সম্পূর্ণ অপরিচিত, আগে কখনো যাইনি। আর্মিরা বললো “সূত্রপাঠ কর”। আমি তাদেরকে বোঝাতে চাইলাম যে, এ ধরনের অনুষ্ঠানে একজন ভান্তে দিয়ে হয় না, এক সংঘ বা কমপক্ষে ৫ জন ভান্তের দরকার হয়।

তিনি বলেন আর্মিরা সূত্র পাঠ করতে চাপাচাপি করলেও তিনি পাঠ করেননি। পরে ঘন্টা খানেক পর সেনারা তাকে গাড়িতে করে বিহারে পাঠিয়ে দেয়। এরপর সেনারা কোন ধরনের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই রমেল চাকমার লাশটি পুড়িয়ে ফেলে।

উল্লেখ্য, সেনারা লাশটি পোড়ানোর সময় বৌদ্ধ ভিক্ষু উপস্থিত রাখতে ইতিপূর্বে নানিয়াচর রত্নাঙ্কুর বন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ বিশুদ্ধানন্দ মহাথেরোর শরাণাপন্ন হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন।

এরপর সেনারা নবোদয় শ্রমণ নামে বুড়ঘাট ইউনিয়নের পূর্ব হ্ডেমরা গ্রামের চিত্তারাম বন বিহারের এক বৌদ্ধ শ্রমণকেও উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করে। তিনিও এতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং সোজা রাঙামাটি চলে যান। এরপরই সেনারা মিথ্যা কথা বলে মহালছড়ি থেকে নাইন্দাগা ভিক্ষুকে নিয়ে আসে।
————————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More